চার্লি চ্যাপলিনের সফলতার কাহিনী | Charlie Chaplin Success Story | Charlie Chaplin

Bangla success story :- This success story written by Jayanti Chakrabarti.This story revolves around Thommas Alva Edison.We are collected this type success story that revive your lost mind.You get more success story on bengali in our website. And I think  all success story will take place in your mind.So please share this story to your friends and I sure they will also benefit from this success story.Thank you so much.              

  চার্লি চ্যাপলিন 

      বিশ্বের সর্বকালের সবসেরা কৌতুকাভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন । মানুষের ভাবভঙ্গী , কথাবার্তা নকল করে দর্শককে হাসিয়ে হাসিয়ে একেবারে লুটোপুটি খাইয়ে দেবার আশ্চর্য কৌশল জানা ছিল তার । সারা পৃথিবীর অসংখ্য সিনেমা অনুরাগী মানুষ চার্লি চ্যাপলিনের গুণমুগ্ধ । নিজের কাজের স্বীকৃতিতে প্রচুর পুরস্কার পেয়েছেন তিনি । কোটি কোটি টাকা উপার্জনও করেছেন দু হাতে । কিন্তু নিজের অতীত দিনগুলাের কথা যখন মনে পড়ত তার তখন হয়তাে এই দুরন্ত রসিক মানুষটিরও চোখের কোণে জমে উঠত দু - ফোটা জল । 

      সমস্ত শৈশবটাই চার্লির কেটেছে দুঃসহ দারিদ্র আর অপমানের মধ্যে । ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে লন্ডন শহরে তার জন্ম । বাবা - মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেল । অনেকগুলি ভাই বােনকে নিয়ে মা পড়লেন নিদারুণ অসহায় অবস্থার মধ্যে । মা ছিলেন অভিনেত্রী । তবে নিয়মিত কাজ পেতেন না । যখন কাজ থাকত না তখন উপােস করে কাটাতে হত সারাটা দিন । নিজে নয় কোনােরকমে সহ্য করতেন কিন্তু ছােটোছােটো অবােধ শিশুগুলি খিদের জ্বালায় যখন চিৎকার করে কাঁদত , তখন আদর করে , গল্প বলে , ভয় দেখিয়ে কোনােমতেই বেচারী মা বাচ্চাগুলিকে ভােলাতে পারতেন না । 

     শেষে এক অদ্ভুত কৌশল বার করলেন তিনি । লন্ডনের বস্তি অঞ্চলে , ছােট্ট ঘুপচি যে ঘরটায় তারা থাকতেন ঠিক তার পাশেই ছিল জনসাধারণের চলার পথ । মা তার বাচ্চাগুলিকে নিয়ে সেই পথের পাশে জানলার ধারে এসে দাঁড়াতেন । নানারকমের মানুষ চলে যেতাে একের পর এক । তাদের কেউ বেঁটে , কেউ ঢ্যাঙা , কেউ রােগা লিকপিক করছে , কেউ বা আবার হাঁসফাস করতে করতে হেলেদুলে চলেছে অতিরিক্ত মেদের ভারে । 

     লােকগুলি দেখতে শুধু বিচিত্র নয় , তাদের হাবভাবও বিচিত্র । কেউ হাসতে হাসতে চলেছে , কেউ ভিখারি , কেউ যেন ভয় পেয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে , কেউ চলেছে অন্যকে গালি দিতে দিতে , গজগজ করতে করতে । আবার কেউ বা উদাসীন । অন্যমনস্ক ভাবে চলেছে কিছু যেন ভাবতে ভাবতে । মা ছেলেদের ডেকে ডেকে পথিকদের দিকে আঙুল তুলে দেখাতেন , তারা অবাক হয়ে দেখত কান্না ভুলে ।

     -দেখ দেখ ওই লােকটা কেমন চোখ মটকে তাকাচ্ছে । চারদিকে । ঠিক এইরকম না ? এই বলে তিনি লােকটির ভাবভঙ্গী অবিকল নকল করে দেখাতেন । হৈ হৈ করে হেসে উঠত বাচ্চাগুলাে । 

      ঘােড়ার পিঠে একজন সৈনিক চলে গেল অহঙ্কারী ভঙ্গিতে । মা অমনি তার ভঙ্গী নকুল করে দেখাতে লাগলেন । আবার হেসে লুটিয়ে পড়ল । বাচ্চারা । এভাবে হাসতে হাসতে হঠাৎ একসময় ঘুমিয়ে পড়ত তারা ক্লান্ত হয়ে । চার্লির মা ভাবতেন , যাক একদিনের সমস্যা কোনােমতে মিটল ।

       কিন্তু মা নিজে ঘুমােতে পারতেন না । 

      সন্তানদের ভবিষ্যতের চিন্তা ও খিদের জ্বালায় দিনের পর দিন জেগেই কেটে যেত তার সারাটা রাত । এভাবে দিনের পর দিন শরীর ও মনের ওপর চাপ সহ্য করতে না পেরে চার্লির মা উন্মাদ হয়ে গেলেন । 

      বড়াে ছেলে চার্লির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল । বেঁটেখাটো চেহারার ,দূর্বল , অপুষ্টিতে ভােগা ছােট্ট ছেলেটি । লেখাপড়াও প্রায় শেখেননি বললে চলে । কে কি কাজ দেবে তাকে ? শেষে মায়ের শিখিয়ে দেয়া পথেই মাকে অনুসরণ করলেন তিনি । 

     মানুষকে নকল করার মধ্যে একটা দারুণ মজা আছে । একটা নির্দোষ নির্মল আনন্দ যা সবাই মিলে ভােগ করা যায় অথচ তার জন্যে কোনাে পয়সা লাগে না । চার্লি লােককে ডেকে ডেকে ক্যারিকেচার করে দেখাত । কখনাে তার নিজের , কখনাে পরিচিত বা বিখ্যাত কোনাে ব্যক্তির । লােকে উদ্দাম হাসিতে ফেটে পড়ত । দু - চার পেন্স পকেট থেকে বের করে বাচ্চাটির হাতে গুঁজে দিত তারা স্বতঃফুর্ত ভাবে । 

     একটু একটু করে উপার্জন বাড়তে লাগল । ছােটো ভাইবােনগুলির জন্য খাবার কিনে এনে , তাদের খাইয়ে দিত চার্লি । তারপর মায়ের সেবা করত । ওষুধ খাওয়াতাে , ঘুম পাড়াত । অবসর পেলেই বসত গিয়ে পথের পাশের সেই জানলায় । 

      ধীরে ধীরে ভালাে হয়ে উঠলেন মা । দুটি একটি শাে করতে লাগলেন । কিন্তু চার্লি ততদিনে দক্ষ , অভিনেতা হয়ে উঠেছে । মা - কে আর কাজ করতে দেবে না । 

     যেদিন মা স্টেজে নিজের শেষ শাে করলেন , সেইদিন সেই স্টেজেই । চার্লি চ্যাপলিনের হল অভিষেক , তার প্রথম শাে । তারপর থেকে আর একটি দিনও পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে । জগৎ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল চার্লির খ্যাতি । ইংল্যান্ডের রানি এলিজাবেথ তাকে দিলেন নাইট উপাধি । সেকালে সিনেমায় কথা ছিল না । তার সিনেমার গল্পগুলাে চার্লি নিজেই লিখতেন , পরিচালনাও করতেন আবার মূল চরিত্রে অভিনয়ও করতেন , নিজেই । গােল্ডরাশ , সিটি লাইটস মডার্ন টাইমস— এসব চার্লির বিখ্যাত সিনেমা । দুঃখদারিদ্র এসব হল ঈশ্বরের গােপন আশীর্বাদ কারণ এগুলিই খুলে দেয় ভবিষ্যতের স্বর্ণদুয়ার । 

      চার্লি চ্যাপলিন কি স্বপ্নেও ভাবতে পেরেছিলেন যে নিঃসীম দারিদ্র্যই তার জীবনে একদিন প্ৰবতারা হয়ে সফলতার পথটি দেখিয়ে দেবে । জীবনে উপচে পড়বে অর্থ , যশ আর আনন্দ !

            Happiest is he who makes other happy .

0 Comments: