পরিত্যক্ত
ইসরাত জাহান পান্না
পরিত্যক্ত রেললাইন,
পরিত্যক্ত মোহনা বস্তির খেটে-খাওয়া আবর্জনা;
খুব দ্রুত হেঁটে যাচ্ছো!
হাতে পৃষ্ঠাভর্তি চিঠি,
কপালে প্রেমিকা হারানোর হেডলাইন,
চুলে জমা ধুলো,
পায়ে প্যাচিয়ে পড়া মোহনা বস্তির ঘাম।
তবুও তুমি হাঁটছো-যেন মুক্ত প্রদীপ,
ইচ্ছে হলেই জ্বলবে,
ইচ্ছে হলেই নিভিয়ে দিবে পৃথিবীর যত আকাংখা।
তোমায় আজ তুচ্ছ মনে হচ্ছে খুব।
যেন অব্যবহৃত ফেলনা যাকে সাজিয়ে না রেখে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে নর্দমায়।
তুমি মিশে যাচ্ছো পরিত্যক্ত হয়ে!
প্রিয়, ফিরে চেও না আর ;
ফিরে চাইলে তোমার মায়া হবে,
মনে হবে আমি তো সেই -যে পৃথিবীর সব সংকট কাটিয়ে পরিত্যক্ত হয়েই বেঁচে থাকতে চেয়েছিলাম,
তোমার বুকের বা-পাশের উত্তরাধিকারী হয়ে।
তোমার মনে হবে আমি ডাকছি,
বলছি, "ফিরে এসো।"
এসব মিথ্যে, আমি বাহানা করছি!
এ পথের সঙ্গী তো আমরা দুজন ,
তোমায় একা মানায় কি করে?
তোমার মনে হবে দেয়াল ফাঁটা রোদ্দুরে এক বোতল জলের তৃষ্ণায় দুঃস্বপ্ন দেখছো।
ফিরে চেও না প্লিজ।
তুমি হাঁটো-নয়তো মিশে যাও মোহনা বস্তির উঁড়ে বেড়ানো স্বাধীন দুর্গন্ধের সঙ্গে।
আমায় উপভোগ করতে দাও প্রেমিক নিঃশেষের যন্ত্রণা।
গেঁথে যাক তোমার নিস্পাপ চোখের জল আমার বুকে কাঁচ হয়ে।
তুমি সহ্য করো,
কিন্তু ফিরে চেও না।
প্রয়োজনে সন্ধ্যার চাঁদ ধরে হেঁটে যাওয়ার সে সময় তুমি ভুলে যাও
ভুলে যাও কনকলতা ফুলের ঘ্রাণ,
ফুলতলীতে ফেলে আসা চায়ের কাপ,
শেষ মাসে কেনা টিপের পাতা,
যমুনার ঘাটে করা শপথ -সব ভুলে আমাকে স্বার্থপর হতে দাও।
তুমি থেমে যেও না।
বলার সাহস করো না,
যে উঠোনে রৌদ্র হলেই শস্যের ঘ্রাণ গিলে খেতে -শালিক,ময়না,টিয়া।
তাতে আজ কাকের ভীড় কেন!
তুমি হাঁটো -রেলগাড়ীর মত নির্দিষ্ট হও।
ফিরে আর চেও না ।
আমাকে স্বার্থপরতার সার্টিফিকেট
অর্জন করতে দাও।
প্লিজ তুমি হাঁটো !
সমাপ্ত
আমাদের আর ও প্রেমের কবিতা রইলো তোমাদের জন্য :-👇👇
0 Comments: