প্রিয় লেখকের প্রিয় লেখা । বাংলা জগতে "বাংলামোটিভ ডট কম ( Love Junction)" এক অন্যতম নাম। গল্প ও কবিতা পড়া বা প্রকাশের এক অন্যতম ঠিকানা। এই ওয়েবসাইট তোমায় সুযোগ দেবে নতুন কিছু লেখার, নতুন কিছু সৃষ্টি করার। তোমার সৃষ্টিশীল জগতের মোটিভেশন হয়ে হাত বাড়িয়ে তোমার পাশে থাকবে। মনে রাখবে কোনো লেখক বা লেখিকা পরিচয়হীন নয়। তাদের লেখায় তাদের নিজেদের পরিচয়। তাই আর দেরি কেনো। তোমার লেখা গল্প বা কবিতা আমাদের Website এ প্রকাশিত করতে চাইলে যোগাযোগ করো আমাদের সাথে, আমাদের Email Id, "lovejunction506@gmail.com". এখানে তোমার লেখা গল্প কবিতা বা মোটিভেশনাল স্টোরি, তোমার real নাম দিয়ে পাঠিয়ে দাও। তবে সেটা অবশ্যই তোমার নিজের লেখা হতে হবে। আমরা তোমার Email এর অপেক্ষায় আছি । ততক্ষনে এই গল্পটি রইলো তোমার জন্য ।
দেবীরা বার বার ফিরে আসে না
রাত তিনটায় তানিশার খিচুড়ি আর কোক খেতে ইচ্ছে হয়েছে। আমি সেই রাতে নিজ হাতে রান্না করে খিচুড়ি আর কোক নিয়ে তানিশার বাসার সামনে হাজির। তানিশা আমার এই পাগলামো দেখে অঝোরে কেঁদেছিলো। বলেছিলো, "তুমি আমার পাগলা প্রেমিক"
ইনবক্সে কতগুলো নীল চুড়ির ছবি পাঠিয়েছে তানিশা। লিখেছে "রুহুল আমি একদিন অনেকগুলো নীল চুড়ি পরে তোমাকে দেখাবো"। পরেরদিন বিকেলে ওর বোন তাসফিয়ার মাধ্যমে এক ঝুড়ি নীল চুড়ি পাঠিয়েছিলাম। সাথে একটি ছোট চিরকুট দিয়েছিলাম, " তানিশা তুমি নীল শাড়ি আর নীল চুড়িতে ঠিক যেন দেবীর মতোন"
তানিশার জন্মদিন ছিলো। উনিশতম জন্মদিন। আমি বারোটায় ওর বাসার সামনে উপস্থিত। ঠিক বারোটায় ফোন করে বললাম, তানিশা একটু গেটের সামনে এসো। ও এসে দেখলো, আমি উনিশটা গোলাপে গাঁথা একটি মালা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। "শুভ জন্মদিন দেবী"। বাসায় ফেরার পর তানিশার টেক্সট" রুহুল তুমি ভালোবাসার প্রতিক"
আমরা এখন বিবাহিত।
বিয়ের বয়স প্রায় বছর খানেক।
রাত চারটার সময় তানিশা বালিশে মাথা রেখে কাঁদছে। কান্নার শব্দে আমার ঘুম ভেঙেছে। ঘুম চোখে জিজ্ঞাসা করলাম, এত রাতেও না ঘুমিয়ে কী প্যান প্যান করে কান্না করছো! তোমার আবার কিসের দুঃখ? তানিশা ভেজা কন্ঠে বলে উঠলো, "রুহুল আজ সেই রাত, যেই রাতে তুমি উনিশ গোলাপে গাঁথা মালা নিয়ে আমাদের গেটে দাঁড়িয়েছিলে, অথচ, তুমি সামান্য উইশটুকুও করলেনা!"
রাব্বির বিয়েতে আমাদের বাসার সবাই যাচ্ছে। তানিশা হলুদ রঙের একটা শাড়ি পরে আমার বাইকের পাশে এসে দাঁড়ালো। আমি বললাম, তুমি সবার সাথে গাড়িতে যাও, আমার সাথে আমার ফ্রেন্ড রাব্বি যাবে। তানিশা ঠিক আছে বলে ফিরে গেলো। পরে জানতে পারলাম তানিশার পেট ব্যাথার কারণে নাকি বিয়েতে আসেনি। আমি বুঝতে পারলাম, ও আমার সাথে রাগ করে আসেনি।
রাব্বির জন্মদিনের পার্টিতে আমি এ্যাটেণ্ড করেছি। খুব মজা করছি৷ তানিশা বারবার ফোন দিচ্ছে। কয়েকবার কেটে দেয়ার পরেও ফোন দিচ্ছে। টেক্সট করলো, "রুহুল আজ একটু দ্রুত বাসায় ফিরবে প্লিজ"। আমি তানিশাকে রিপ্লাই দিলাম, " তুমি ঘুমিয়ে পরো, আমি আজ বাসায় ফিরবোনা, সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছি"
পরেরদিন সকালে বাসায় ফিরলাম। তানিশা বাসায় নেই। দেয়ালে একটা কাগজে বড় করে লেখা আছে, "হ্যাপী এ্যানিভার্সারি"। খাটজুড়ে নীল শাড়িটা পড়ে আছে। শাড়ির উপরে সেই নীল চুড়িগুলো ছড়ানো। বালিশের উপরে একটি চিরকুট, "যেখানে ছোটছোট অনুভূতিগুলো অবহেলায় আর্তনাদ করে, সেখানে সংসারটা অর্থহীন "।
তানিশাকে ফোন করলাম। ফোনটা কেটে দিয়ে টেক্সট করলো, "বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই, বঞ্চিত করে বাঁচালে মোরে"
প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলো। তানিশাহীন জীবনটা যেন শুকিয়ে যাওয়া নদীর মতোন, যার দাগ থাকে, জল থাকেনা।
দেবীরা বারবার জীবনে ফিরে আসেনা।
তানিশাও আর কোনদিন আমার অনুভূতিহীন সংসারে ফিরে আসেনি |
সমাপ্ত
0 Comments: