Home
Success Story
চার্লস ডারউইনের সফলতার গল্প | Charles Darwin success story | Bangla success story |
Bangla success story :- This success story written by Jayanti Chakrabarti.This story revolves around Charles Darwin.We are collected this type success story that revive your lost mind.You get more success story on bengali in our website. And I think all success story will take place in your mind.So please share this story to your friends and I sure they will also benefit from this success story.Thank you so much.
মানুষ পৃথিবীতে এলাে কেমন করে ? এই প্রশ্নটি যুগ যুগ ধরে মানুষকে ভাবিয়েছে । কতাে ভাবেই না মানুষ খুঁজে বেড়িয়েছে তার উত্তর ।
কিন্তু পায়নি ।
সঠিক উত্তরটি মানুষকে যিনি জানালেন , শুধু জানালেনই না বিশ্বের বড়াে বড়াে বিজ্ঞানীদের ডেকে প্রমাণ করে দিলেন যে তিনি ঠিক কথাই বলছেন তিনি হলেন চার্লস ডারউইন । বিবর্তন বাদের আবিষ্কারক ।
তিনি বললেন যে জেলিফিস নামক এক ধরনের সামুদ্রিক এককোষী প্রাণী থেকেই পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব । তারপর থেকে প্রাণীজগৎ আর উদ্ভিদ রাজ্যে এসেছে অসংখ্য বিচিত্র প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ । তারা ক্রমাগত পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে খাওয়াতে একটু একটু করে উন্নত হয়েছে । মানুষ হচ্ছে সেই উন্নয়ন ধারার সবচেয়ে শেষ পর্যায়ের জীব । এই মতবাদের নাম দিয়েছিলেন ডারউইন Theory of revolution বা বিবর্তনবাদ ।
এতােবড়াে একটা আবিষ্কার যিনি করেছিলেন বিশ্বের মহা মহা বিজ্ঞানী বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন যার কথা শুনে সেই চার্লস ডারউইনকে কিন্তু এককথায় একজন মূখই বলা যায় । স্কুল থেকে শিক্ষকরা তাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন ।
কেনই বা দেবেন না ? চার্লস প্রতিদিন স্কুলে এসে পেছনের বেঞ্চে চুপচাপ বসে থাকতেন । বন্ধুদের সঙ্গে বড়াে একটা খেলাধুলাে বা গল্পগাল করতেন না । শুধু জানলার বাইরে তাকিয়ে তাকিয়ে ড্যাবড্যাবে বড়াে বড়াে চোখ দুটি দিয়ে একমনে দেখে যেতেন গাছপালা , পাখি , প্রজাপতি , নানান কীটপতঙ্গ । মাস্টারমশাইরা পড়া জিজ্ঞেস করলে বিপন্ন মুখে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতেন । ফলে জুটত শাস্তি । তাতে অবশ্য চার্লসের কোনাে আক্ষেপ ছিল না কারণ ক্লাসের বাইরে বের করে দিলেই বাইরের জগৎটাকে আরাে কাছে থেকে দেখার সুবিধা হতাে তার ।
ধীরে ধীরে শিক্ষকরা হাল ছেড়ে দিলেন । চার্লস স্কুলে নিয়মিত আসাও বন্ধ করে দিল । অর্ধেক দিনই অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকতে হয় বেচারাকে । পড়া তৈরি হয় না । বছরের পর বছর একই ক্লাসে পড়ে থাকে । শেষে শিক্ষকরা একদিন চার্লস - এর মা - বাবাকে ডেকে বললেন এ ছেলের আর কি হবে না । একে বাড়িতে নিয়ে যান । কাল থেকে আর স্কুলে আসবার দরকার নেই ।
বেঁচে গেল চার্লস । বাবা মা - ও রুগ্ন ছেলেকে বকাবকি না করে নিজের যা ভালাে আগে তাই করবার স্বাধীনতা দিলেন ।
চার্লস সারাদিন বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায় । মাঠে ঘাটে বনে বাদাড়ে কতাে রঙবেরঙের প্রজাপতি , কীটপতঙ্গ , পাখি । কতাে বিচিত্র সরীসৃপ । ডারউইন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে । যা কিছু তার চোখে অদ্ভুত লাগে তাকেই পকেটে পুরে ঘরে নিয়ে আসেন । ছােটো ছােটো কাচের জারে , শিশিতে , বােতলে ভরে রেখে দেন । কিছুদিনের মধ্যে রঙবেরঙের নানারকম বিচিত্র পােকামাকড়ে ভরে উঠল তার ঘর । বাড়িতে থাকলেই ডারউইন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোনাে একটা পােকার দিকে তাকিয়ে বসে থাকেন । পােকাটার চালচলন একমনে লক্ষ করে যান । বন্ধুরা তার কাণ্ডকারখানা দেখে হাসে আর ঠাট্টা করে বলে আমাদের চার্লস মস্ত বড়া বৈজ্ঞানিক হবে ।
এভাবে একবছর দুবছর নয় - বাইশটি বছর কেটে গেলো চার্লসের । লেখা পড়া কাজ কর্ম কিছুই করলেন না । শুধু জীব জন্তু , পোকামাকড় সংগ্রহ করা আর তাদের গতিবিধী খাওয়া - ঘুম , সংসার যাত্রা - এই সব পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে লক্ষ্য করে যাওয়া - এই নিয়ে বাইশটি বছর কেটে গেলো তার । ততদিনে লোকে আড়ালে পাগল বলতে শুরু করেছে তাকে ।
এমনি সময় হঠাৎই একদিন এসে গেল একটা দারুণ সুযােগ । ডারউইন যেন মনে মনে এইটারই প্রতীক্ষা করছিলেন । বিগলস নামে একটা জাহাজ বেরিয়েছিল পৃথিবী ভ্রমণে । ডারউইন এসে তার ক্যাপ্টেনকে ধরে বসলেন তাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে । ভাড়ার টাকা দিতে পারবেন না তবে বিনা বেতনে সবরকম ফাইফরমাশ খেটে দিতে রাজী আছেন ।
ক্যাপ্টেন রাজী হয়ে গেলেন । পাঁচ বছর ধরে বিলস্ জাহাজের সঙ্গে পৃথিবীর নানা দেশ ঘুরে বেড়ালেন তিনি । বনে জঙ্গলে আর পাহাড় পর্বতে ঘুরে ঘুরে অসংখ্য বিচিত্র সব প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করতে লাগলেন । নানা রকমের জীবজন্তুতে জাহাজ ভরে উঠল ।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এই বিপুল পরিমাণ জীবজন্তু সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরে এলেন চার্লস । এরপর শুরু হল তার আসল সাধনা । দিনরাত ওইসব নতুন সংগৃহীত জীবজন্তুদের জীবনযাত্রার খুঁটিনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন আর মােটা এক নােটবুকে লিখে রাখতে লাগলেন তার অভিজ্ঞতার কথা । এইভাবে পার হয়ে গেল আরে কুড়ি বছর । চার্লস ততদিনে যৌবন পার হয়ে এসেছেন । বার্ধক্য উকি মারছে শরীরের আনাচে কানাচে ।
দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করতে করতে একটি গভীর সত্য উপলব্ধি করতে লাগলেন চার্লস । তাহল এই যে , প্রকৃতির রাজ্যে শুধুমাত্র টিকে থাকার জন্যেই প্রতিমুহূর্তে লড়াই করে চলেছে প্রাণীকুল । পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় । এক একটি প্রজাতি । যারা মানিয়ে চলতে পারে তারা বেঁচে থাকে আর নিজের বৈশিষ্ট্যগুলিকে দিয়ে যায় ভবিষ্যত বংশধরদের মধ্যে । যতদিন টিকে থাকে এক একটি প্রজাতি তত পরিশীলিত হয় তাদের জীবনযাত্রা আর উন্নত হয় বুদ্ধিবৃত্তি । এভাবেই বাঁদর থেকে এসেছে বনমানুষ এবং বনমানুষ থেকে বিবর্তনের পথ বেয়ে সৃষ্টি হয়েছে মানুষের । হয়তাে সুদূর ভবিষ্যতে এই মানুষ ও বিবর্তনের ধারা অনুসরণ করে আর এক রকম চেহারা নেবে । তারা হবে আরাে উন্নত জীব ।
এইসব কথা ডারউইনের মুখে শুনে এবং তাঁর গবেষণার ফলাফল বিচার করে পৃথিবীর মানুষ তাজ্জব বনে গেল । চার্লস নামের একটা স্কুলছুট , মুখ অপদার্থ ছেলের মাথাতেই যে এতাে সব রহস্য লুকোনাে ছিল— তাকি সেদিন ঘুণাক্ষরেও জানতে পেরেছিল তার শিক্ষকমশাইরা ? জানলে কি আর বলতেন— ওর দ্বারা কিস্যু হবে না ?
যারা সহজে হাল ছাড়ে না , মানুষের নিন্দা , প্রশংসা , সমালােচনা সবকিছুকে তুচ্ছ করে নিজের লক্ষ্যে দৌড়তে জানে , ক্লান্ত হয় না কিছুতেই , তাদের কাছে অসম্ভব বলে কোনাে কথাই নেই ।
0 Comments: