জন ওয়াশিংটনের সফলতার কাহিনী | John Washington successs story in bengali | John Washinton

Bangla success story :- This success story written by Jayanti Chakrabarti.This story revolves around John Washington.We are collected this type success story that revive your lost mind.You get more success story on bengali in our website. And I think  all success story will take place in your mind.So please share this story to your friends and I sure they will also benefit from this success story.Thank you so much.       

জন ওয়াশিংটন  

When fate closes one door faith opens another . 

        জন ওয়াশিংটনের নাম অনেকেরই অজানা । কিন্তু মানুষের মনের জোর আর তার আশ্চর্য শক্তি নিয়ে যদি কোনাে ইতিহাস লেখা হয় তবে তার প্রথম পাতাতেই থাকবে জন ওয়াশিংটনের নাম । দুর্ভাগ্য যাকে টলাতে পারেনি । চরম দুঃসময়ের মধ্যে দিয়েও যিনি নিজস্ব লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেছেন নির্ভুল পদক্ষেপে এবং শেষপর্যন্ত ছিনিয়ে নিয়েছেন মুকুট নির্মম ভাগ্য দেবতার কৃপণ হাতের মুঠি থেকে । 

         ১৮৮৩ সালের কথা । জন রুবলিং নামে নিউইয়র্ক শহরের এক স্থপতির মাথায় একটা আইডিয়া এল– নিউইয়র্ক শহরটার সঙ্গে লভ আইল্যান্ড নামের দ্বীপটাকে যদি একটা সেতু দিয়ে জুড়ে দেয়া যায় তবে বেশ হয় । 

      কাজটা হলে যদিও অনেকের অনেক দিক থেকেই লাভ হবার সম্ভাবনা , তবু দুনিয়ার বড় বড়া ইঞ্জিনিয়াররা কিন্তু একবাক্যে বললেন এ কাজটা করা এককথায় অসম্ভব । তাঁরা রুবলিঙকে এই সেতু তৈরির স্বপ্নটা ভুলে যেতে বললেন । 

       কিন্তু রুবলিঙ কিছুতেই সেতু তৈরির স্বপ্ন মন থেকে মুছে ফেলতে পারলেন না । কি করে স্বপ্নটাকে সার্থক করে তােলা যায়- দিনরাত শুধু এই কথাই তিনি চিন্তা করতে লাগলেন । কিন্তু অন্য কোনাে স্থপতির সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই তারা সেটাকে একটা উট কল্পনা বলে হেসে উড়িয়ে দেন । তাই শেষপর্যন্ত আর কাউকে না পেয়ে রুবলিঙ তার ছেলে ওয়াশিংটনের সঙ্গেই তার স্বপ্নের সেতু নিয়ে আলােচনায় মেতে উঠলেন । 

       ওয়াশিংটনও একজন উঠতি ইঞ্জিনীয়ার । বাবার স্বপ্নের নেশা তাকেও পেয়ে বসল । পিতা পুত্র মিলে দিনরাত ভেবে ভেবে একটার পর একটা উপায় বার করে ফেললেন কি করে সেতু তৈরির পথে বাধাগুলােকে দূর করে ফেলা যায় ! 

       তারপর আর কি ! বাপবেটায় মিলে মহা উদ্যমে শুরু করে দিলেন কাজ । বেশ কিছু ইঞ্জিনীয়ার ভাড়া করে শুরু হয়ে গেল সেতু তৈরি । প্রথম কিছুদিন বেশ ভালােভাবেই এগিয়ে চলল সবকিছু । কিন্তু হঠাৎ অতর্কিতে নেমে আসা নিয়তি সবকিছু ওলােট পালট করে দিল । 

      এক আকস্মিক দুর্ঘটনা— কর্মরত অবস্থাতেই ছিনিয়ে নিল রুবলিঙের জীবন । ছেলে ওয়াশিংটনও রক্ষা পেলেন না । দুর্ঘটানায় ভীষণ ভাবে আহত হলেন তিনি । তার ব্রেনের একটা অংশ পুরােপুরি নষ্ট হয়ে গেল । দীর্ঘ চিকিৎসার পর কোনােরকমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেন বটে তবে হাঁটাচলা করা , কথা বলা এমনকি নড়াচড়া করার ক্ষমতা পর্যন্ত তার রইল না । 

      যারা গােড়া থেকেই বাধা দিয়ে আসছিলেন এবার তারা সমস্বরে বলতে লাগলেন ,
      -কি ? বলেছিলাম না ? এরকমটা যে হবে আমরা জানতুম ।
      —জেদী , একগুঁয়ে লােকেদের শাস্তি এভাবেই হয় । 
      –এখন আহাম্মুকি করার ফল বােঝে— ইত্যাদি নানা কথা । ওয়াশিংটনেরও কানে কিছু কিছু কথা এসে পৌঁছে যায় । কিন্তু তাতে ফুল হয় উল্টো । কৃতকর্মের জন্য অনুশােচনা করার বদলে তার মনে কোখেকে যেন সঞ্চিত হতে থাকে নতুন উদ্যম , নতুন স্বপ্ন । সেতুটা যে এখনাে তৈরি করা হয়নি । অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে যে বাবার স্বপ্ন , নিজেরও স্বপ্ন । দেহে যতক্ষণ প্রাণ আছে ততক্ষণ এই স্বপ্নের হাত থেকে রেহাই নেই । 

      ওয়াশিংটন আবার ভাবতে লাগলেন কেমন করে আবার শুরু করা যায় অসম্পূর্ণ হয়ে পড়ে থাকা সুবিশাল কর্মযজ্ঞ । 
    
       কিন্তু এই বিশাল সেতুর পুরাে কল্পনাটাই জানত শুধু রুবলিঙরা । আন্য ইঞ্জিনীয়াররা শুধু তাদের নির্দেশমতাে কাজ করে যেতেন । 
  
      ওয়াশিংটন যে আবার তার সহকর্মীদের ডেকে পাঠাবেন তাদের যথাযথ নির্দেশ দিয়ে আবার শুরু করে দেবেন কাজ সে পথও বন্ধ । 
 
      কারণ ওয়াশিংটন তাে একটি কথাও বলতে পারেন না । হাতের আঙুলগুলিকেও নাড়াতে পারেন না যে লিখে জানিয়ে দেবেন তার বক্তব্য । তাহলে কি হার মানতে হবে ? হাল ছেড়ে দিতে হবে ? স্বপ্নের সেই সেতু তবে কি সত্যি সত্যিই আর কোনােদিন বাস্তবে গড়ে তােলা যাবে না ? 

       বিছানায় শুয়ে শুয়ে ওয়াশিংটন যখন এইসব কথা ভাবতেন তখন তার ভেতর থেকে কে যেন বলে উঠত না , হাল ছেড়াে না । হাল ছেড়ােনা কিছুতেই । 
 
        হঠাৎ ওয়াশিংটনের মনে পড়ল একটি কথা । একটি আঙুল— হ্যা একটিমাত্র আঙুল তাে তিনি এখনাে নাড়াতে পারেন । এই একটি মাত্র আঙুলকেই কাজে লাগাতে হবে । 

      সাহায্যে এগিয়ে এলেন ওয়াশিংটনের স্ত্রী । স্ত্রীর বাহুতে আঙুলের ভগা দিয়ে স্পর্শ করে ওয়াশিংটন তার মনের নানা ভাব প্রকাশ করতে লাগলেন । এভাবে অভ্যাস করতে করতে ধীরে ধীরে মােটামুটি একটা সাঙ্কেতিক ভাষা তৈরি করে ফেললেন তরুণ স্থপতি ওয়াশিংটন । ঠিক হল স্ত্রীর বাহুতে স্পর্শ করে তিনি তার মনের ভাবগুলি জানিয়ে দেবেন । আর তার স্ত্রী সেই কথাগুলিকে ভাষায় প্রকাশ করে বলবেন সহযােগী স্থপতিদের । 

       ভাঙ্গা স্বপ্ন আবার জোড়া লাগতে শুরু করল । স্ত্রীর বাহুতে আঙুলের স্পর্শ বুলিয়ে ওয়াশিংটন জানিয়ে দিলেন তার ইঞ্জিনীয়ারদের আবার ডাকা হােক । 

      স্বামীর ইচ্ছার কথা মুহূর্তে বুঝে নিয়ে ইঞ্জিনীয়ারদের সব খবর পাঠানাে হল । আবার বসল বৈঠক ওয়াশিংটনের শয্যার চারপাশ জুড়ে । একই পদ্ধতিতে ওয়াশিংটন প্রকাশ করতে লাগলেন তার কৌশল আর তার বুদ্ধিমতী স্ত্রী তা বুঝে নিয়ে ভাষায় বুঝিয়ে দিতে লাগলেন শ্রোতাদের । 

       শুনলে মনে হবে অসম্ভব ব্যাপার , কিন্তু ঘটনাটা সত্যিই ঘটল । অসম্পূর্ণ ব্রীজের কাজ শুরু হয়ে গেল আবার নতুন উদ্যমে । 

       দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চলল নির্মাণের কাজ । এই তেরােটি বছর সমানে নির্দেশ দিয়ে গেলেন ওয়াশিংটন তার ওই একটিমাত্র সক্রিয় আঙুলের সাহায্যে— যতােদিন না শেষ হয় তার স্বপ্নের সেতু । 

       আজ সুদীর্ঘ ব্রুকলিন সেতু নিউইয়র্কের অন্যতম দর্শনীয় বিষয় । একটি মানুষের পর্বতের সদৃশ দৃঢ়তার প্রতীক হয়ে , নিষ্ঠা ও একাগ্রতার জয়স্তম্ভ হয়ে এই সেতু আজ দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে যে মানুষটিকে একদিন সবাই একবাক্যে পাগল বলেছিল ।

Man does not live in years , but in work.- Aditya Birla


সমাপ্ত 

0 Comments: