Prakton ( প্রাক্তন ) | Pallab Mondal | Sad Bengali Poem

Prakton ( প্রাক্তন ) | Pallab Mondal  | Sad Bengali Poem

প্রিয় কবিদের প্রিয় কবিতা । বাংলা জগতে "বাংলামোটিভ ডট কম" এক অন্যতম নাম। গল্প ও কবিতা পড়া বা প্রকাশের এক অন্যতম ঠিকানা। এই ওয়েবসাইট তোমায় সুযোগ দেবে নতুন কিছু লেখার, নতুন কিছু সৃষ্টি করার। তোমার সৃষ্টিশীল জগতের মোটিভেশন হয়ে হাত বাড়িয়ে তোমার পাশে থাকবে। মনে রাখবে কোনো লেখক বা লেখিকা পরিচয়হীন নয়। তাদের লেখায় তাদের নিজেদের পরিচয়। তাই আর দেরি কেনো। তোমার লেখা গল্প বা কবিতা আমাদের Website এ প্রকাশিত করতে চাইলে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে, আমাদের Email Id, "lovejunction506@gmail.com". এখানে তোমার লেখা গল্প কবিতা বা মোটিভেশনাল স্টোরি, তোমার real নাম দিয়ে পাঠিয়ে দাও। তবে সেটা অবশ্যই তোমার নিজের লেখা হতে হবে। আমরা তোমার Email এর অপেক্ষায় আছি । ততক্ষনে পল্লব মন্ডলের, " প্রাক্তন " কবিতাটি রইলো তোমার জন্য ।  

 প্রাক্তন 

পল্লব মন্ডল 

দীর্ঘ ৫ বছর কথা নাই বা হলো 

শুকনো ঝরা পাতায় নাই বা ঝরলো শিশির, 

তুই তো এখন অন্য গল্পের প্রধান চরিত্রে 

মোহ মায়া সব কাটিয়ে উঠেছি ।

তবু ও আজ কষ্ট অনুভব করতে পারি 

হুম, কষ্ট আমি ও পাই 

ভীষন রকম ভাবে কষ্ট হয় ,

চোখ দুটো চায় ভিজতে 

কান্না বেরিয়ে আসতে চাই তবু ও বৃষ্টি নামে না দু চোখে। 

কাঁদলে সান্ত্বনা কে দেবে ?


জীবন গল্পে তোকে কোনো দিন দোষী করি নি। 

সব প্রেমে কি প্রাক্তন খারাপ হয় ?

কিছু প্রেমে তো প্রাক্তন ভালোবাসা হয়ে থেকে যায় ।

তবু এক অজানা কষ্টে ভিতর থেকে ক্ষয়ে যেতে বসেছি 

আজ মনে হয় যদি আমি ও পারতাম সব ভুলে যেতে 

হয়তো পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষের মধ্যে আমি ও হতাম ।


যতবারই সব কিছু হারাবার ভয়ে নিজেকে সপে দিয়েছি 

ততবারই হয়েছি আত্মত্যাগী 

পরিস্তিতি হয়েছে নাটকীয় 

আমি হয়েছি নাটকের চরিত্র 

অভিনয় করছি ভালো থাকার ।


অন্তরের বিষে পুড়তে থাকা তোর যে ঘ্রান আগুন নিভাতো 

সে ও আজ লাইটারে বন্ধী ।


প্রাক্তন ফিরে আছিস না আর 

করিস না আর আকর্ষিত ,

বিকর্ষনের সাথে অভস্ত আমি 

ঠোঁট আজ নিকোটিনে ধর্ষিত ।

সমাপ্ত 


Prakton

Pallab Mondal

Dirgho panch bochor kotha nai ba holo 

Shukno jhora patai nai ba jhorlo shishir 

Tui toh ekhon onno golper prodhan charitrey.

Moho maya sob katiye uthechi,

Tobu o ajj kosto anuvob kortey pari 

Hmm, kosto ami o pai 

Vishon rokom vabe kosto hoi

Chokh duto chai vijtey

Kanna beriye astey chai tobu o bristi namey na du chokhey ,

Kadley santona ke debey.


Jibon golpey tokey kono din doshi kori ni 

Sob preme ki prakton kharap hoi?

Kichu preme toh prakton valobasa hoye theke jai.

Tobu ek ojana koste vitor theke khoye jetey bosechi

Ajj mone hoi, jodi ami o partam sob vule jetey

Hoito prithibir sob theke sukhi manusher moddhe ami o hotam.


Jotobar e sob kichu haranor voye nijeke sopey diyechi

Toto bar e hoyechi attotagi

Poristiti hoyeche natokiyo 

Ami hoyechi natoker charitro

Avinoi korchi valo thakar.


Antorer bishey purtey thaka tor je ghran agun nivato

Sey o ajj lighter a bondhi .


Prakton firey achis na r

Koris na r akorshito,

Bikorshoner sathey ovvosto ami

Thot ajj nikotiney dhorshito.

End

Bengali Poem :- This poem is written by Pallab Mondal. Poem name, "Prakton". We are collected best love and romantic poem in Bengali. We can also published your poem or story in Bengali. If  you want to send your Bengali poem . Like sad poem, romantic poem, love poem and many others poem in Bengali. Then you can contact me. My email id , "lovejunction506@gmail.com". So please sent your poem or story and don't forget to mention your name. I published your creation on my website. Please share this poem in your friends or lover to gift a beautiful moment. Thank you so much.

Jibon Nodir Du Kule ( জীবন নদীর দু কূলে ) | Pallab Mondal | Sad Love Poem In Bengali

Jibon Nodir Du Kule ( জীবন  নদীর দু কূলে ) | Pallab Mondal | Sad Love Poem In Bengali
প্রিয় কবিদের প্রিয় কবিতা । বাংলা জগতে "বাংলামোটিভ ডট কম" এক অন্যতম নাম। গল্প ও কবিতা পড়া বা প্রকাশের এক অন্যতম ঠিকানা। এই ওয়েবসাইট তোমায় সুযোগ দেবে নতুন কিছু লেখার, নতুন কিছু সৃষ্টি করার। তোমার সৃষ্টিশীল জগতের মোটিভেশন হয়ে হাত বাড়িয়ে তোমার পাশে থাকবে। মনে রাখবে কোনো লেখক বা লেখিকা পরিচয়হীন নয়। তাদের লেখায় তাদের নিজেদের পরিচয়। তাই আর দেরি কেনো। তোমার লেখা গল্প বা কবিতা আমাদের Website এ প্রকাশিত করতে চাইলে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে, আমাদের Email Id, "lovejunction506@gmail.com". এখানে তোমার লেখা গল্প কবিতা বা মোটিভেশনাল স্টোরি, তোমার real নাম দিয়ে পাঠিয়ে দাও। তবে সেটা অবশ্যই তোমার নিজের লেখা হতে হবে। আমরা তোমার Email এর অপেক্ষায় আছি । ততক্ষনে পল্লব মন্ডলের, "জীবন নদীর দু-কূলে" কবিতাটি রইলো তোমার জন্য ।  


 জীবন  নদীর দু কূলে 

পল্লব মন্ডল 

জীবন তরী ভাসাস মাঝি দু কূলে 

ভোমরা বসবে না সখি এক ফুলে ।

তরী টা তোর বেয়ে যাবি    কুল কিনারা নাহি পাবি 

জীবন নদীর ঢেউ ভাঙবে না এক কূলে ।।


নদীর বক্ষ নিংড়িয়ে উঠিবে যে ঝড় 

আকাশের ক্রন্দন বারি পড়িবে অঝোর ,

এই কূলেতে ঠাঁই বসিয়া    অন্য কুলের কথা ভাবিয়া 

কোন ফাঁকে তোর ভেসে যাবে নদীর বুকে ঘর ।।


ভালোবাসা বিলাস  না মাঝি দু তীরে 

স্থির থাকবে না মন এক মন্দিরে ,

ওই পারেতে যেই যাবি   এই পরের ভাসবে ছবি 

আসবি আবার ফিরে ।


ভাববি শেষে স্মৃতির পাতায় 

পাওয়া না পাওয়ার স্তব্ধতায় ,

সময়ের প্রতিক্ষনে     নিষ্ঠুরতার ভক্ষনে

থেমে যাবে তোর তরী 

জীবনের শেষ খেয়ায় ।

সমাপ্ত 


Jibon Nodir Du kule

Pallab Mondal

Jibon tori vasas na majhi du kule

Vomra bosbe na sokhi ek fule.

Tori ta tor beye jabi     Kul kinara nahi pabi 

Jibon nodir dhew vangbey na ek kule.


Nodir bokkho ningriye uthibey je jhar

Akasaher krondon bari poribey ajhor,

Ei kuletey thai bosiya    Onno kuler kotha vabiya

Kon fakey tor vesey jabe nodir bukey ghar.


Valobasa bilas na majhi dui tirey

Isthir thakbe na mon ek  mondire,

Oi paretey jei jabi   Ei parer vasbe chobi

Asbi abar firey.


Vabbi seshey sritir patai

paoa na paoar stobdhotai.

Somoi er protikhoney   Nishthurotar vokkhoney

Themey jabey tor tori

Jiboner sesh kheai.

Somapto

আমাদের আর ও ভালোবাসার কবিতার লিস্ট রইলো তোমাদের জন্য :- 👇👇👇👇

Bengali Poem :- This poem is written by Pallab Mondal. Poem name ,"Jibon Nodir Du Kule". We are collected best love and romantic poem in Bengali. We can also published your poem or story in Bengali. If  you want to send your Bengali poem . Like sad poem, romantic poem, love poem and many others poem in Bengali. Then you can contact me. My email id , "lovejunction506@gmail.com". So please sent your poem or story and don't forget to mention your name. I published your creation on my website. Please share this poem in your friends or lover to gift a beautiful moment. Thank you so much.

Jogindar Singh Saluja ( যােগীন্দর সিং সালুজা ) | Bangla Motivational Success Story |

Jogindar Singh Saluja ( যােগীন্দর সিং সালুজা ) | Bangla Motivational Success Story |

তোমার লেখা গল্প বা কবিতা আমাদের Website এ প্রকাশিত করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারো আমাদের সাথে, আমাদের Email Id, "lovejunction506@gmail.com".আমরা তোমার Email এর অপেক্ষায় আছি । ততক্ষনে এই কবিতাটি তোমার জন্য ।  

 যােগীন্দর সিং সালুজা

       যােগীন্দর সিং সালুজা ওরফে বিটু খেলাধুলার জগতে আজ এক পরিচিত নাম । মিস্টার ইন্ডিয়া প্রতিযােগিতায় জাতীয় খেতাব জয়ী এই যুবক তিন তিনবার ভারােত্তোলন প্রতিযােগিতাতেও জাতীয় পুরস্কার ছিনিয়ে এনেছেন । 

        অথচ এই বিটু একজন প্রতিবন্ধী । দু - দুটি পা - ই পােলিওতে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তার । কিন্তু সেই ক্ষতি তার সুদে আসলে পুষিয়ে দিয়েছিল দুখানি পেশীবহুল হাত আর সুগঠিত অটুট স্বাস্থ্য । বিটুর বয়স যখন মাত্র ১০ মাস , পােলিও আক্রমণ করল তাকে । দুটি পা - ই অকেজো হয়ে গেল তার । 

      জ্ঞান হবার পর থেকেই নিজেকে সমাজ ও সংসারের এককোণে । পরিত্যক্ত , করুণার পাত্র হিসাবে দেখতে অভ্যস্ত যে ছেলে তার মনের কোনাে সংগােপনে জন্ম নিল এক দৃঢ় প্রতিজ্ঞা খাড়া হয়ে দাঁড়াতে হবে । এই পৃথিবীকে দেখিয়ে দিতে হবে আমিও পারি । দুটো পা অকেজো হয়ে গেছে বলে আমি ফেলনা নই , অকেজো , অপদার্থ , বর্জ্য পদার্থ নই এ সংসারে । আজ যার দিকে উপেক্ষা আর করুণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে মুখ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছাে তােমরা , একদিন তার দিকেই সম্ভ্রম আর প্রশংসা পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে হবে তােমাদের । যােগীন্দরের মনে প্রতিজ্ঞার জন্ম নিল সমাজের ঘৃণা আর অবহেলা থেকেই  ।

       ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত দু - পায়ে একের পর এক অপারেশন চালানাে হল যােগীন্দরের । ধীরে ধীরে সাড় ফিরে এলাে অসাড় প্রত্যঙ্গে কিন্তু খর্ব পায়ের ক্ষুদ্রতা দূর করা গেল না । এবার যােগীন্দর ভর্তি হল জিমন্যাসিয়ামে । এই পঙ্গু শরীরটাকেই সর্বশ্রীমণ্ডিত করে তুলতে হবে । তার জন্যে কঠিন সাধনা শুরু হল । সে এক দুর্দান্ত লড়াই— শারীরিক এবং মানসিক ।

       প্রথম যখন ক্ষুদে ক্ষুদে দুই পায়ের ওপর সােজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুই কাধে ভারী লােহার ডাম্বেল দুটো তুলে নিয়েছিল বিটু তখন চারপাশের সব্বাই হাে হাে করে হেসে উঠেছিল তাকে দেখে । তারা যতাে হাসত ততই জেদ চেপে যেত বিটুর । নিজেকে শক্তি যােগাবার জন্য বারবার মনে মনে পবিত্র মন্ত্রের মতাে সে আবৃত্তি করত— “ ম্যায় তাে চিতা হ্যা , কিসে তাে নহি ডর দে । আমি চিতাবাঘের মতাে নির্ভীক । কোনাে কিছুকে ভয় পাব না । 

       বর্তমানে বিটু ওরফে যােগীন্দর সিং ১৫০ কিলাে ওজন তানায়াসে তুলে ধরে দুই হাতে । তার পা দুটো আজ আর টলে না । তার চোখ ছাপিয়ে আজ আর জল আসে না । আজ সে সকলের প্রশংসা আর ভালােবাসার পাত্র ।

        ভারতশ্রী খেতাব যােগীন্দরকে যেমন দিয়েছে জীবনে প্রতিষ্ঠা ও সাধনার পুরস্কার তেমনি বিশ্বের প্রতিটি হালছাড়া হার মানা হতাশ মানুষের কানে পৌঁছে দিয়েছে এই মন্ত্র – নির্ভীক ভাবে , যদি একনিষ্ঠ সাধনা চালিয়ে যাও , তবে জীবনে যা কিছু চাও সবই একদিন সহজেই করায়ত্ত হবে তােমার । মানুষের অসাধ্য কিছু নেই । বিটুর জীবন তার এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ । 

       নিজে প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করতে করতে যােগীন্দর সিং দেখেছে কিভাবে প্রতি পদে অবহেলিত , অপমানিত ও লাঞ্ছিত হতে হয় হতভাগ্য মানুষদের আমাদের এই অর্ধশিক্ষিত স্বার্থপর সমাজে । জানে , নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদেরকেই করতে হবে জেনে কিভাবে কতাে কষ্টে তাদের একটু একটু করে এগােতে হয় ।

      তাই বিটুর জীবনে এখন একমাত্র স্বপ্ন ও সাধনা হল শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি উন্নত মানের জিমন্যাসিয়াম তৈরি করা যেখানে তার প্রতিবন্ধী ভাইবােনরা স্বল্পব্যয়ে অথবা বিনা ব্যয়ে শরীর চর্চা করতে পারবে । নিজের পায়ের ওপর দাঁড়াতে পারবে খাড়া হয়ে মাথা তুলে পৃথিবীকে ডেকে দেখাতে পারবে— দ্যাখাে , আমিও পারি । আমরাও পারি ।

         I have found that if you love life , life will love you back .

                                                  - Arthur Rubinstein

Success Story :- This success story written by jayanti chakrabarti. This story revolves around Jogindar Singh Saluja. Jogindar Singh Saluja biography. We are collected this type success story that revive your lost mind. You get more success story on bengali in our website. And I think  all success story will take place in your mind. So please share this story to your friends and I sure they will also benefit from this success story. Thank you so much.    

Dhup Kathi (ধুপকাঠি ) | Narendra Nath Mitra | Bangla Love Story

Dhup Kathi (ধুপকাঠি ) | Narendra Nath Mitra | Bangla Love Story

তোমার লেখা গল্প বা কবিতা আমাদের Website এ প্রকাশিত করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারো আমাদের সাথে, আমাদের Email Id, "lovejunction506@gmail.com".আমরা তোমার Email এর অপেক্ষায় আছি । ততক্ষনে এই গল্পটি তোমার জন্য ।  

ধুপকাঠি 

নরেন্দ্রনাথ মিত্র 

মান্যবরেষু ,

         আমি আপনার সম্পূর্ণ অপরিচিতা । বিনা পরিচয়ে আপনাকে এই চিঠি লিখতে বসেছি , আমার ধৃষ্টতা মার্জনা করবেন । তবে আমার পক্ষ থেকেও একটি বলবার কথা আছে । আমি আপনার একটি পরিচিত মেয়ের অনুরােধেই তার বক্তব্য আপনাকে লিখে জানাচ্ছি । প্রথমে তার জবানিতেই লিখতে শুরু করেছিলাম ; কিন্তু সে এমন অগােছালাে এলােমেলােভাবে বলতে আরম্ভ করল যে , আমার পক্ষে তা গুছিয়ে লেখা অসাধ্য । তাই আমি তার কাছ থেকে সমস্ত ঘটনাটা জেনে নিয়ে তার বলবার কথা সাধ্যমতাে বুঝাতে চেষ্টা করে আপনাকে এই চিঠি লিখছি । জানি না এতে উদ্দেশ্য কতটুকু সিদ্ধ হবে ; তার মনের কথা কতটুকু আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারব । 

      প্রথমে আমি তাকে বলেছিলাম , “ তুমিই দু - চার লাইন যা পার লিখে দাও । তােমার নিজের হাতের লেখা চিঠি পেলেই বিমলবাবু খুশি হবেন "। কিন্তু রেণু তাতে কিছুতেই রাজি হল না । এ - ও হতে পারে , আপনার সঙ্গে ওর যা সম্পর্ক তাতে ঘটনাটা সব খোলাখুলিভাবে লিখতে ওর লজ্জা করছে । 

     আপনি বােধ হয় রেণুকে এবার চিনতে পেরেছেন । আপনাদের গ্রামের সেই অনাথ মেয়েটি ; বাগবাজারের চৌধুরিদের বাড়িতে তিন বছর আগে আপনি যাকে রেখে এসেছিলেন । চৌধুরিরা আপনার আত্মীয় । হিসেব করলে যত দূরেরই হােক ওঁদের সঙ্গে রেণুরও একটু সম্পর্ক বেরােয় । সেই কথা ভেবেই আপনি ওকে অন্য কোথাও না রেখে , কোনাে আশ্রমে - টাশ্রমে না পাঠিয়ে চৌধুরিদের ওখানে দিয়েছিলেন । এখন মনে হয় মেয়েটার অন্য কোনাে ব্যবস্থা করলেই বােধ করি ভালাে করতেন । তা হলে ও খানিকটা লেখাপড়া কী হাতের কাজ - টাজ কিছু শিখতে পারত । চৌধুরিদের বাড়িতে তেমন কোনাে সুযােগই ও পায়নি । 

     প্রথমে অবশ্য বাড়ির বউঝিদের অল্পস্বল্প ফুটফরমায়েশ খাটা , বাচ্চা ছেলেদের কোলে নেওয়া , খাওয়ানাে , ঘুমপাড়ানাে এই সব ছােটোখাটো কাজের ভারই ওর ওপর ছিল । সবাই বলেছিলেন , বাড়ির মেয়েদের মতাে থাকো । তুমি তাে আমাদের আত্মীয় , লজ্জাসংকোচের কী আছে ?

       এমন অভ্যর্থনা পেয়ে রেণুর খুব আনন্দ হয়েছিল । বড়াে তেতলা বাড়ি । বাড়িভরা লােকজন । ওর মতাে যােলাে - সতেরাে বছরের মেয়েই আছে বাড়িতে গুটি চারেক । কেউ স্কুলে পড়ে , কেউ কলেজে ? সবাই ওকে ভাব জমাবার জন্যে , দলে টানবার জন্যে ব্যস্ত । কেউ নিজের পুরােনাে - শাড়ি দেয় , কেউ স্নাে - সাবান দিয়ে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করে । বাড়ির ছেলেরাও যেন ওর ওপর একটু মনােযােগী । বােনদের বাদ দিয়ে রেণুকেই তারা নানা কাজে ডাকে , নানা শৌখিন কাজে খাটায় । দামি কলমটা রেণুর হাতে ছেড়ে দিয়ে বলে , “ ধুয়ে এনে কালি ভরে দাও তাে "।

        বিছানা পেতে দেওয়া , ফুলদানিতে ফুল সাজিয়ে রাখা , এসব কাজে রেণু আনাড়ি হলেও তাকে দিয়ে করিয়েই যেন বাড়ির ছেলেদের আনন্দ । বাড়ির মেয়েরা ঠাট্টা করে বলে , “ রেণু একা আমাদের সকলের জায়গা কেড়ে নিয়েছে।"

      বউরাও পরিহাস করে , তােমাদের জায়গা ঠিকই আছে ঠাকুরঝি , আমাদের নিয়েই ভাবনা । ” 

    এসব ঠাট্টা - পরিহাস বুঝবার বয়স রেণুর হয়েছে । সেখান থেকে লজ্জায় পালিয়ে গিয়ে গিন্নিদের কাছে এসে বসে । 

     এ সময় মাঝে মাঝে আপনি খোঁজখবর নিতে আসতেন । রেণুকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতেন , “ কেমন আছ ? "

     রেণু হেসে বলত , ‘ ভালােই ।"

     বাড়ির গিন্নিদের কাছে আপনি ওর প্রশংসাই তখন শুনতে পেতেন । এমন শান্তশিষ্ট কর্মঠ ভালাে মেয়ে আর হয় না । 

      কিন্তু অবস্থাটা ক্রমে ক্রমে বদলাতে লাগল । শোভাবাজারে চৌধুরিদের যে কাপড়ের দোকান আছে , তাতে লাভের অঙ্ক কমে গেল । অফিসের ছাঁটাইয়ের ফলে বাড়ির গুটি দুই ছেলে বেকার হল । আর কলেজ থেকে নতুন যারা পাস করে বেরােল তাদের চাকরি জুটবার কোনাে লক্ষণ দেখা গেল না । কাপড়ের দোকানের আয় এমন নয় যাতে এতবড়াে পরিবারের খরচ বেশ ভালােভাবে চলতে পারে । 

     এসব বাইরের খবর আপনি নিশ্চয়ই জানেন । কিন্তু ভিতরের মেয়েদের ব্যাপারটা বােধ হয় তেমন করে জানেন না । কারবারের অবস্থা খারাপ হওয়ায় বড়োকর্তা ছােটোকর্তা দুজনের মেজাজই গেল বিগড়ে । সংসারে ঝগড়াঝাটি কথাকাটাকাটি শুরু হল । সবাই ধমক খেতে লাগল । রেণুও বাদ গেল না । 

     বড়ােকর্তা বললেন , “ ওসব বাবুগিরি বিলাসিতা চলবে না , খরচ কমাও ।"

      দোকানের দুজন কর্মচারীকে ছাঁটাই করলেন । বাজারের পয়সা চুরি করে বলে চাকরটাকে বিদায় দিলেন । একটা ঝি ছিল , খাওয়াপরা ছাড়া দশ টাকা করে মাইনে নিত , তাকেও বাদ দিলেন । বললেন , “ নিজেরা করেকর্মে খাও । এত বাবুগিরি চলবে না ।"

     বাইরের লােকজনদের মধ্যে রইল একটা ঠিকে - ঝি আর রেণু । ওর ভয় হতে লাগল বড়ােকর্তা তাকেও চলে যেতে না বলেন , তা হলে সে কোথায় দাঁড়াবে । এই চৌধুরিবাড়ি ছাড়া পৃথিবীতে আর কোথাও যে কোনাে জায়গা আছে , সে কথা রেণুর মনে হয়নি । রেণু নিজেই ইচ্ছা করে সংসারের বেশি বেশি কাজ করতে লাগল । গিন্নিদের , বউদের হাতের কাজ কেড়ে নেয় । রাঁধে , জল টানে , কুড়িজন লােকের রেশনের চালের কাঁকর বাছে , পাছে কেউ তাকে অনাবশ্যক মনে করে । 

     তা অবশ্য কেউ মনে করলেন না । সংসারের অনেক কাজের ভারই গিন্নিমা ওর হাতে ছেড়ে দিলেন । বিশেষ করে রান্নাঘরের ভারটা প্রায় সম্পূর্ণই রেণুর ওপর পড়ল । না পড়ে উপায় কী । বড়ােগিন্নি , ছােটোগিন্নি কারােরই ছেলেপুলে হওয়া বন্ধ হয়নি । আর বউদের তাে সবে শুরু হয়েছে । তা ছাড়া অসুখবিসুখ আছে । মেয়েদের স্কুলকলেজের পড়া আর পরীক্ষার কড়াকড়ি বেড়েছে । তাদের পক্ষে সংসারের অন্য কাজকর্ম করা পােষায় না । তাই স্বাভাবিকভাবেই রেণুকেই সব বুঝে নিতে হল । 

     আপনি তখন চাকরিবাকরি আর সভাসমিতি নিয়ে ব্যস্ত । আসবার অবসর বেশি পান না । তবু দু - চার মাস অন্তর মাঝে মাঝে এসে যখন জিজ্ঞেস করতেন , কেমন আছ রেণু ? ’ তার কাছ থেকে ওই একই উত্তর পেতেন , ‘ ভালােই আছি বিমলদা ।'

      আপনি ব্যস্তভাবে চলে যেতেন । দ্বিতীয় প্রশ্ন করতেন না । যদি করতেন তা হলে তখনই হয়তাে আপনি কিছু কিছু বুঝতে পারতেন । আমার মনে হয় , জিজ্ঞাসা না করেই আপনি বুঝেছিলেন । কিন্তু কিছু করাটা আপনার পক্ষে সহজসাধ্য হয়নি । আপনি অবিবাহিত , মেসে থাকেন । নিজের নানারকম ঝামেলা আছে । এ সব জানত বলেই রেণু আপনাকে কিছু খুলে বলত না । ভাবত , অনর্থক বিব্রত করে কী লাভ ! আপনি ওর জন্যে যথেষ্ট করেছেন । আরও যদি কিছু করবার থাকে তা আপনি নিজেই করবেন । 

      গত বছর বড়োকর্তার সেজো আর ছােটোকর্তার মেজো মেয়ে দীপ্তি , তৃপ্তি দুজনের একসঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল । সেই বিয়েতে আপনি নিমন্ত্রণ খেতে এসে বড়ােগিন্নির কাছে বেণুর নামে প্রথম নালিশ শুনে যান । রেণু 'আড়ালে দাঁড়িয়ে সব শুনেছিল।বড়ােগিন্নি আপনার কাছে বলেছিলেন , রেণুর সেই আগের মতাে শান্ত স্বভাব আর নেই । ভারি মুখ হয়েছে ওর । কথায় কথায় তর্ক করে । মুখে মুখে জবাব দেয় । আরও একটা গুণ বেড়েছে । রাস্তার ফেরিওয়ালা ডেকে হাসিগল্প করে । এ কথা শুনে আপনি যে ভ্রূ কুঁচকেছিলেন , তা রেণুর চোখ এড়ায়নি । আপনি বলেছিলেন , ' এসব তত ভালাে নয় মাসিমা । আপনি ওকে শাসন করে দেবেন । '

      আপনার এই কথায় রেণু বড়াে দুঃখ পেয়েছিল । ওর হাতে ছিল দইয়ের হাঁড়ি , ভেবেছিল সেটা রেখে এসে আপনাকে বুঝিয়ে বলবে । 

      রেণু মাঝে মাঝে তর্ক করে , কথার পিঠে কথার জবাব দেয় তা ঠিকই । তার একার ঘাড়ে সবাই সব কাজ চাপিয়ে দেন , আর পান থেকে একটু চুন খসলেই যদি তা নিয়ে বকাবকি করেন , তা হলে একেবারে মুখ বুজে ও কী করে থাকে । সেও রক্তমাংসের মানুষ । কিন্তু কোনাে খারাপ কথা সে কাউকে বলেনি । একদিন শুধু ছােটোগিন্নিকে বলেছিল , ‘ এমন বিনে মাইনের ঝি আর পাবেন না ।' তিনিও জবাব দিতে ছাড়েননি , বলেছিলেন , 'যেখানে মাইনে পাস গেলেই পারিস । ভাত ছড়ালে আবার কাকের অভাব হয় না । আজকালকার দিনে খেতে পরতে দিলে অমন কত গন্ডা পাওয়া যায় ।'

       সব কথাই আপনাকে বলবে ভেবেছিল । কিন্তু গিয়ে দেখে , আপনি বিয়েবাড়ির পান মুখে দিয়ে চলে গেছেন । আপনি শুধু একপক্ষের কথাই শুনে গেলেন , আর - এক পক্ষের কিছুই শুনলেন না , সেজন্যে রেণুর মনে সেদিন ভারী দুঃখ , অভিমান , এমনকি একটু রাগও হয়েছিল আপনার ওপর । সুযােগ পেলে সেদিন অনেক কথাই রেণু আপনাকে বলত । চৌধুরিদের কারবারের অবস্থা আগের চেয়ে ভালাে হওয়া সত্ত্বেও বাড়ির কাজকর্মের জন্যে ওঁরা যে আর নতুন লােকজন রাখেননি , জল তােলা , বাটনা বাটা , দু বেলা রান্না , সবই রেণুকে করতে হচ্ছে এ খবরটা আপনাকে সে জানাত ।

       আর ফেরিওয়ালাদের ডেকে গল্প করার কথা । তাও রেণুর মুখেই আপনি তখন শুনতে পেতেন । কারণ , ব্যাপারটা তখনও খুব ঘােরালাে হয়ে ওঠেনি । ওদের সেই রামকান্ত বােস স্ট্রিটের গলি দিয়ে কত ফেরিওয়ালাই তাে যেত । কেউ জিনিস বেচতে চায় , কেউ কিনতে চায় । ছিট কাপড় , বাসন , শিশিবােতল , শােনপাপড়ি , চিনেবাদাম , ফুল , ধূপকাঠির ফেরিওয়ালারা সকলেই চৌধুরিবাড়ির কাছ দিয়ে যাতায়াত করত । দুপুরবেলায় কী বিকেলবেলায় এসে হাঁক দিত । বাড়ির বউঝিরা দোরের কাছে এসে নেড়েচেড়ে দেখত , দরদাম করত , কোনাে কোনােদিন জিনিস রাখত , বেশির ভাগ দিনই ফেরত দিত ।

      সেদিন বিকেলবেলা নতুন বউ নীলিমা দোতলা থেকে বলল , “ রেণু আমি চুল বাঁধছি ভাই । ধূপকাঠিওয়ালা এসেছে । দু আনার ধূপকাঠি রাখ তাে ওর কাছ থেকে । ওর কাঠিগুলাে বেশ ভালাে । "

     বিকেলের জলখাবারের জন্যে রেণু সবে ময়দা মাখতে বসেছিল । তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে সদরের কাছে এসে দাঁড়াল , 'দু আনার ধূপকাঠি দিন তাে ।'

     'দাও' কথাটা ঠিক মুখে এল না রেণুর। বাইশ - তেইশ বছরের যুবক । লম্বা ছিপছিপে চেহারা । গায়ে একটা ছিটের হাফশার্ট । পায়ে একজোড়া স্যান্ডালও আছে । একে চট করে ' তুমি ’ বলা কি সহজ ! হলই বা ফেরিওয়ালা । 

     ‘ চার আনা দামের প্যাকেট যদি নেন সেগুলি আরও ভালাে হবে । ফেরিওয়ালা একটু হেসে বলেছিল । রেণু বলেছিল , 'না না , আপনি দু - আনারটাই দিন ।'

     ফেরিওয়ালা আর কিছু না বলে দু - আনার ধূপকাঠি দিয়ে চলে গিয়েছিল । 

     পরদিন দুপুরের একটু পরে ফেরিওয়ালা ফের এসে হাজির — ‘ ধুপকাঠি । রেণু দোরের কাছে এগিয়ে এসে বলল , আজ আর দরকার নেই আমাদের । কাল যা দিয়ে গিয়েছিলেন , তা - ই পড়ে আছে । 

      ফেরিওয়ালা বলল , ‘ অল্প করে কিছু নিন । কাল আপনাদের এখানে বউনি করায় আমার বিক্রি খুব ভালাে হয়েছিল ।'

      রেণু হেসে বলল , 'এ কথা বােধ হয় সব বাড়িতেই একবার করে বলেন !'

      ফেরিওয়ালাও হাসল ,' না না , সত্যি বলছি । আপনার হাতে প্রথম বউনি হওয়ায় কাল আমার খুব ভালাে হয়েছে । ”  

      এমন শুভলক্ষণ যে রেণুর মধ্যে আছে , সে কথা এর আগে কেউ তাকে বলেনি । ভারি ভালাে লাগল ওর । বলল , 'দাঁড়ান । আমি পয়সা নিয়ে আসছি ।'

       সেদিন আর পয়সা চাইতে নতুন বউদির কাছে গেল না রেণু , পুরােনাে বউদের কাছেও নয় । ছােটো একটা বার্লির কৌটোর মধ্যে দু - চার পয়সা করে নিজে যা সঞ্চয় করেছিল , তার থেকে একখানা দু - আনি বের করে নিয়ে এল । 

      ফেরিওয়ালা রঙিন কাগজে মােড়া ধূপকাঠির আর একটি প্যাকেট ওর হাতে দিয়ে গেলো ।

      কাঠিগুলি সব রেণু নিজে নিল না । বাড়ির বউঝিদেরও দুটি - চারটি করে বিলােতে লাগল । নতুন বউ বলল , “ খুব যে ফুর্তি । এতক্ষণ ধরে কী গল্প হচ্ছিল ধূপকাঠিওয়ালর সঙ্গে !'

      'বাঃ রে , কী আবার হবে ।'

       নীলিমা হেসে বলল , ' আমি সব শুনেছি ।'

       বড়ােগিন্নি ধূপকাঠিগুলি দেখে রাগ করতে লাগলেন ; এই তাে কালও কতকগুলাে কাঠি কিনেছ নতুন বউমা । আজ আবার কেন মিছামিছি পয়সা নষ্ট করলে ? ” 

       নীলিমা জবাব দিল , 'আজ আর আমি কিনিনি মা । রেণু তার নিজের পয়সায় কিনেছে ।'

       বড়ােগিন্নি জবাব দিলেন , 'নিজের পয়সা পরের পয়সা বুঝিনে বাপু ! পয়সা তো সব এক জায়গা থেকেই আসে । বাড়িসুদ্ধ সকলেই যদি এমন বিলাসী হয়ে ওঠে তা হলেই হয়েছে ।'

        কিন্তু বড়ােগিন্নির রাগ আর বকুনিতে রেণুর সেদিন মন খারাপ হল না । তাঁর কথার কোনাে জবাব দিল না রেণু । সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির কাজকর্ম সেরে , গা ধুয়ে , চুল বেঁধে , একখানা ধােয়া শাড়ি পরে নিজের ঘরে ধূপকাঠি জ্বালল । 

       রান্নাঘর আর ভাঁড়ারঘরের মাঝখানে ছােট্ট একটু খুপরির মতাে জায়গা আছে । সেই ওর থাকবার ঘর । আগে অবশ্য দোতলায় একটি ঘরে ছােটো ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ও থাকত । কিন্তু বাড়ির দুটি ছেলের বিয়ে হওয়ায় ওবাড়িতে ঘরের অনটন হয়েছে । রেণু নেমে এসেছে এই নীচের ঘরে । সন্ধ্যাবেলায় সে ঘরে এই প্রথম ধূপকাঠি জ্বালল। 

      খাওয়া দাওয়া চুকতে এগারােটা বাজল । সকলের ঘুমােতে বারােটা ; কিন্তু রেণুর চোখে ঘুম নেই । সে একটার পর একটা ধূপকাঠি জ্বেলেই চলেছে । 

      তারপর রেণু প্রায়ই ধূপকাঠি রাখত । ধূপকাঠিওয়ালার সঙ্গে কিছু কিছু আলাপও চলত ; এসব ধুপকাঠি কি নিজেরা তৈরি করা যায় , না বাজার থেকে কিনে আনতে হয় ; টাকায় কত লাভ থাকে , ধুপকাঠিওয়ালা কখন বেরােয় কখন ফেরে ; হলই বা মা আর ছেলের সংসার ; চলে কী করে - এই সব সাধারণ কৌতুহল , তুচ্ছ কথাবার্তা । 

       বড়ােগিন্নি এইটুকুই অতবড়াে করে সেদিন আপনার কাছে লাগিয়েছিলেন ।

       কিন্তু ব্যাপারটা গােপন রইল না । ধূপকাঠিওয়ালার সঙ্গে রেণুর এই ঘনিষ্ঠতা শুধু ওদের বাড়ির নয় , পাড়ার সকলেরই চোখে পড়ল । ধূপকাঠি এ পাড়ায় বিক্রি হােক আর না হােক , ছেলেটি রােজই আসে । রেণুও জানলার ধারে এসে দাঁড়ায় । রােজ দুজনের কথা হােক আর না হােক , যেন দেখা হলেই যথেষ্ট । সারাদিন নানা কাজকর্মের মধ্যে রেণু এই মুহূর্তটির জন্যে প্রতীক্ষা করে । রােজ সেই বিশেষ সময়টিতে জানলার কাছে আসে । এক প্যাকেট করে ধূপকাঠি নেয় । কিন্তু ফেরিওয়ালা আর পয়সা নেয় না। রেণুরও পয়সা দেওয়ার তেমন গরজ নেই । জানলার একটা শিক আপনিই ভেঙে গিয়েছিল । ( রেণু তাই বলে ) , কি সে নিজেই তুলে ফেলেছিল । ( চৌধুরিদের অভিযােগ তাই ) জানি না — সেই বড়াে ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে নাকি চায়ের কাপও রেণু ফেরিওয়ালার হাতে তুলে দেয় । 

       ব্যাপারটা নিয়ে যে পাড়ায় নানারকম কানাকানি , হাসাহাসি চলছে , তা আমিও লক্ষ করেছিলাম । 

       তারপর কালকের ঘটনার কথা বলি । শনিবারের অফিস , সকাল সকাল ছুটি হয়ে গেছে । বাড়িতে কাজ আছে বলে আমি আর কোথাও না গিয়ে তাড়াতাড়ি চলে এলাম । কিন্তু আমাদের গলির মধ্যে ঢুকতে গিয়ে দেখি , এগুতে আর পারিনে । ভিড়— গােলমাল হইচই । সেই ধূপকাঠিওয়ালাকে ধরে চৌধুরিবাড়ির পালােয়ানের মতাে দুটি ছেলে ঘুসির পর ঘুসি চালাচ্ছে । পাড়ার আর সব ছেলেবুড়ােরাও তাদের সঙ্গে যােগ দিয়েছে । 

      ফেরিওয়ালা সেই মার ঠেকাতে ঠেকাতে বলছে , “ আগে আমার কথা শুনন । আমরা বিয়ে করব ঠিক করেছি । '

      পাড়ার সব মেয়ে - পুরুষ হাে - হাে করে হাসছে আর নানারকম ব্যঙ্গবিদ্রুপ করছে । একজন তরুণ ছেলে আর একটি তরুণীকে বিয়ে করবে , এর চেয়ে পরিহাসের ব্যাপার সংসারে যেন আর কিছুই নেই — যেহেতু ছেলেটি ফেরিওয়ালা , আর মেয়েটি বাড়ির ঝি ।

      ছেলেটির পক্ষ নিয়ে আমি দু - চার কথা বলতে যাচ্ছিলাম , লােকে এমন সব মন্তব্য শুরু করল যে , ঘরে চলে আসতে বাধ্য হলাম । 

      শেষ পর্যন্ত ওরা ছেলেটিকে আধমরা করে ঘাড় ধরে গলি থেকে বের করে দিল । বাণ্ডিল থেকে পড়া ধূপকাঠিগুলি রাস্তার ধুলােয় ছড়িয়ে রইল । 

      দাদার কাছে ব্যাপারটা বলায় তিনিও আমার ওপর রাগ করলেন , “ তাের এসবের মধ্যে যাওয়ার কী দরকার ছিল ? "

     আমি আর যাইনি । কিন্তু রেণুই ও বাড়ি থেকে কী করে যেন পালিয়ে আমার কাছে চলে এসেছে । সামনাসামনি বাড়ি । ওর সঙ্গে আমার সামান্য মুখচেনা ছিল । কিন্তু এখন ও আমাকে এমন করে ধরেছে যেন আমি ওর চিরকালের চেনা । 

      বলেছিলাম , তুমি যাও , কটা দিন চুপচাপ থাক , তারপর যা হয় ব্যবস্থা করা যাবে । ”

     কিন্তু রেণু বলল , 'না দিদি , যারা ওকে অমন করে মেরেছে , আমি তাদের বাড়িতে আর একমুহূর্তও থাকব না ।'

     দাদা শান্তশিষ্ট নির্বিরােধ মানুষ । তিনি বড়াে বিব্রত বােধ করছেন । চৌধুরিরা শাসাচ্ছে পুলিশ - কেস করবে । তাতে অবশ্য সুবিধা করতে পারবে না । রেণুর বয়স আঠারাে উতরে গেছে । কিন্তু আইনটাইন তাে সব সময় বড়াে কথা নয় । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা প্রবলের হাতের অস্ত্র । 

      রেণুর অনুরােধে আপনাকে সব কথা খুলে জানালাম । ছেলেটির নাম ঠিকানাও ওর কাছ থেকে শুনে নিয়েছি । অজিত বিশ্বাস । বেলগাছিয়ার উদ্বাস্তু কলােনিতে থাকে । 

      আপনি যদিও চৌধুরিদের আত্মীয় , তবু আপনার ওপর রেণু খুব ভরসা রাখে । 

      সশ্রদ্ধ নমস্কার গ্রহণ করবেন । 

      অনধিকার - চর্চার জন্য আর একবার মার্জনা চাইছি । ইতি -

                                                                                                          বিনীতা 

                    মাধুরী সেনগুপ্ত 

আশ্বিন ১৩৬০

সমাপ্ত 

Love Story :- This love story is written by Narendra Nath Mitra. Story name " Dhup Kathi ". We are collected best love and romantic story and poem in Bengali. We can also published your poem or story in bengali. If  you want to send your Bengali poem . Like sad poem, romantic poem, love poem and many others poem in Bengali. Then you can contact me. My email id , "lovejunction506@gmail.com". So please sent your poem or story and don't forget to mention your name. I published your creation on my website. Please share this poem in your friends or lover to gift a beautiful moment. Thank you so much.


I Hate My Wife | Imraul Rafat | Bangla Sad Love Stoy

I Hate My Wife | Imraul Rafat | Bangla Sad Love Stoy

  প্রিয় কবিদের প্রিয় কবিতা । বাংলা জগতে "বাংলামোটিভ ডট কম" এক অন্যতম নাম। গল্প ও কবিতা পড়া বা প্রকাশের এক অন্যতম ঠিকানা। এই ওয়েবসাইট তোমায় সুযোগ দেবে নতুন কিছু লেখার, নতুন কিছু সৃষ্টি করার। তোমার সৃষ্টিশীল জগতের মোটিভেশন হয়ে হাত বাড়িয়ে তোমার পাশে থাকবে। মনে রাখবে কোনো লেখক বা লেখিকা পরিচয়হীন নয়। তাদের লেখায় তাদের নিজেদের পরিচয়। তাই আর দেরি কেনো। তোমার লেখা গল্প বা কবিতা আমাদের Website এ প্রকাশিত করতে চাইলে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে, আমাদের Email Id, "lovejunction506@gmail.com". এখানে তোমার লেখা গল্প কবিতা বা মোটিভেশনাল স্টোরি, তোমার real নাম দিয়ে পাঠিয়ে দাও। তবে সেটা অবশ্যই তোমার নিজের লেখা হতে হবে। আমরা তোমার Email এর অপেক্ষায় আছি । ততক্ষনে এই কবিতাটি রইলো তোমার জন্য ।   

I Hate My Wife

Imrual Rafat 

 বাসর রাতে বউকে তুই বলে ডেকেছিলাম ।
বলেছিলাম তুই আমাকে আপনি করে ডাকবি 
আর কাছে ঘেঁষার চেষ্টা ও করবি না ,
কারন বউ ছিলো পুরো কয়লার ড্রাম 
কুচ কুচে কালো তার গায়ের রং ।

বাসর ঘরে ঢুকে তাকিয়ে দেখি ঠিক যেন একটা কালো কুকুর বসে আছে লাল ঘোমটা দিয়ে ,
ঠোঁটে লাল লিপস্টিক , কপালে ঢ্যামা একটা টিপ ।
ওয়াক থু ,
কি বিচ্ছিরি সাজ !
লাল কালো কি এক অগোছালো সাজ ।
বাতি বন্ধ করতেই বুঝলাম 
যেন একটা আঁধার নিয়ে শুয়ে আছি ,
নেহাৎ যৌনতার দায়ে সাড়া হয়েছিলো সেই রাতে 
তারপর বিছানা থেকে তুলে দিয়েছিলাম তাকে ।

যৌতুক বিরোধী ছিলাম আমরা 
তাই বাবার বক্তব্য ছিলো 
বিনা যৌতুকে নিজের আত্মীয়ের কারো মেয়েকে পুত্রবধূ করে আনবেন ,
তাই হলো ।
 
হাজারো অনিচ্ছা সত্ত্বে বাবার গরীব বন্ধুর কালো মেয়েকে বিয়ে করতে হলো আমায় ,
কলেজের সেলফি বয়ের এমন একটা বউ জুটলো যে 
জীবনে বউকে নিয়ে আর সেলফি তোলা যাবে না ।
বন্ধুরা অনেক অনুরোধ করতো 
বউ নিয়ে বেড়াতে আসতে 
কিন্তু আমি তাকে নিতাম না ,
হাজার হোক লজ্জা বলে কিছু আছে তো নাকি ।

রাতে বাড়ি ফিরতাম দেরি করে 
তখন ও সে জেগেই থাকতো 
খাবার বেড়ে দিতো 
কথা বলতাম না আমি ,
কিভাবে বলি ?
বারে ,ডিস্কোতে সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে দেখে 
বাড়ীতে কেমন আলকাতরা ভালো লাগে ?
ওর কি প্রয়োজন সেটা কখনো জিজ্ঞাসা করি নি ।
বাড়িতে সবার কাপড় চোপড় কেনা হয় 
আর খাবার তো আছেই 
আর কি চাই ,

এই ভাবেই কেটে গেলো কয়েক মাস 
সেদিন এক বন্ধু তার গার্ল ফ্রেন্ডকে গিফট দেওয়ার জন্য কিছু কিনেছিলো 
সেটা আমাকেই পৈছে দিতে হবে ।
অনেক রাত্রে গিফট বক্স নিয়ে বাড়ি ফিরলাম আমি 
দেখলাম ও সোফায় ঘুমিয়ে আছে 
ভাবলাম খেয়েছে তো ?
আমি না আসা পর্যন্ত ওকে খেতে দেখিনি কখনো ।
শুয়ে পড়লাম ,
কিন্তু মনটা বড় খচ খচ করছিলো 
ডেকে তুলে বললাম 
এই খেয়ে তারপর শুবি ।

পরদিন সকালে গিফট বাক্স খুঁজে দেখি ওটা আর আস্ত নেই 
বউ ওটা খুলে ভিতরে যা ছিল ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে ।
ওর হাসিমুখটা দেখে কিছু বললাম না 
বেচারা , কালো বলে কি সাজতে নেই ?
নিজেই হেসে ফেললাম সেদিন 
তারপর নতুন করে গিফট কিনে পৌঁছে দিলাম আমি ।

তারপর একদিন ও বমি করলো ,
বুঝলাম ও মা হতে চলেছে ।

এক শীতের বিকালে বাবা মা বেড়াতে গেলো গ্রামের বাড়ি 
বাসায় রইলাম আমি আর সে 
সে রাতে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরলাম ,
কারন বাড়ি পুরো একা 
গ্রাম্য মেয়ে 
বলা যায় না  ভুতের ভয় টয় পায় নাকি ।
বাসায় ফিরে শুনলাম রান্না হয় নি 
কারণ জানতে চাইলে ও বললো ,
"ভেবেছিলাম আপনি বন্ধুদের সাথে খাবেন 
দুপুরে কিছু ভাত ছিলো 
ও আমার হয়ে যাবে " ।
আমি ফ্রিজ খুলে দেখলাম সামান্যই ভাত 
বললাম, "চল কাপড় পড়ে নে হোটেলে খাবি" ।
ও যেতে চাইলো না 
আমি রেখে যেতে পারছি না একা 
অবশেষে দুজনে বাহির হলাম ।

রাতের শহর 
ও যেন হা হয়ে দেখছিলো সব কিছু 
বললাম , "হাত ধর না হলে ভিড়ে আবার হারিয়ে যাবি "।
সেদিন প্রথম আমার সাথে বেরিয়েছিলো 
প্রথম আমার হাত ধরেছিলো 
মন্দ না ।
আমি ও ওর আঙুল ধরেছিলাম যেন হারিয়ে না যায় 
"হোটেলে আমাকে আপনি করে বলবি না 
তুমি করে বলবি 
ঠিক আছে " ?
মাথা নাড়লো ও 
কিন্তু হোটেলে খাওয়ার সময় এক বার ও আমায় ডাকেনি 
উল্টো আমি বলেছিলাম 
তুমি আর ও কিছু খাবে ?

সেদিন দেখি স্নোর টিউব কেটে বাহির করছে 
রেগে বললাম 
"এই স্নো ফুরিয়ে গেছে বলতে পারো না "
সেদিনই সে প্রথম আমার কাছে কিছু চাইলো 
একটা শ্যাম্পু চেয়েছিলো ।

আমি সেদিন ওকে নিয়ে মার্কেটে গেলাম কসমেটিক্স কিনতে 
বন্ধুরা অনেকেই দেখেছিলো সেদিন ,
আর সবাই ভাবী বলে যথেষ্ট রেস্পেক্ট ও করেছিলো ।
সবাই তিন দিন পর আমাদের আড্ডা তে নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলো ওকে 
তিন দিন পর আমি ওকে নিয়ে গেছিলাম মোটর সাইকেলে ,
ওর জীবনে প্রথম লং ড্রাইভ 
আর ড্রাইভার ছিলাম আমি 
আর আমার বউকে নিয়ে আমি প্রথম ।

জীবনে প্রথম ওর জন্য আজ খোদার দরবারে হাত তুলেছি আমি ,
ও যেন সুস্থ থাকে 
কারন আজ ও মা হবে 
আজ আমি বাবা হবো ।
জানিনা কোথা থেকে আজ এতো কান্না আসছিলো আমার 
হাসপাতালে ওর কাছে বার বার ছুটে যাচ্ছিলাম 
ও হাত ধরে যতবার বলেছিলো ওর খুব ভয় করছে ,
ততো বারই বলেছি ,
"ভয় পেও না আমি আছি "।
সেদিন কাউকে খোঁজে নি 
ও শুধু আমায় খুঁজেছে 
আমায় পাশে পেয়েছে 
আমায় পাশে থাকতে বলেছে বার বার ।
আর আমি বার বার পর্দার ফাঁকে শুধু ওকেই দেখলাম । 
সিজারে নেওয়া হয়েছিলো ওকে 
সন্তান পেলাম 
কিন্তু ওকে আর পেলাম না ।
ওর দেহটা ধরে সেদিন খুব কেঁদেছিলাম ,
মনে হচ্ছিলো খুব যেন চিৎকার করে কান্না করি 
 কলিজাটা ছিঁড়ে গেছে আমার ।

আজো ওর কবরের পাশে ছুটে যাই 
চিৎকার করে বলি ফিরে এসো তুমি ,
একটা রাত তোমার সাথে গল্প করা বাকি ছিলো 
একটা সেলফি তোমায় নিয়ে তোলা বাকি ছিলো ।
জানি ওকে ভালোবাসা দিতে পারিনি 
কিন্তু আজ বুঝি,
 কেন বুকের বাম পাশটা চিন চিন করে ব্যাথা করে ওঠে ।

সমাপ্ত 

 Love story :- This Story is written by Imrual Rafat. Story name "I Hate My Wife". Collected from "Charu Dairy". We are collected best love and romantic poem and story in Bengali. We can also published your creation in Bengali. If  you want to send your Bengali poem . Like sad poem, romantic poem, love poem and many others poem in Bengali. Then you can contact me. My email id , "lovejunction506@gmail.com". So please sent your poem or story and don't forget to mention your name. I published your creation on my website. Please share this poem in your friends or lover to gift a beautiful moment. Thank you so much.