স্মৃতি হত্যা
পল্লব মন্ডল
উপন্যাসটা লিখতে লিখতে হটাৎ ই কলমটা থমকে গেলো। সব সম্পর্ক গুলো পর পর হত্যা করার মতো স্মৃতি হত্যা করতে পারলে তো মন্দ হতো না।
অদুরে পড়ে থাকা জির্ণশীর্ণ সেই ডাইরিটা যেনো ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তার বুকের ভিতর শুকনো গোলাপের পাঁপড়ি গুলো যেনো এক অব্যক্ত অস্থিরতায় মুক্তি পেতে চাইছে। আমি ক্ষণিকের জন্য থমকে গেলাম। যে সময় গুলো চলে যায় স্মৃতি রেখে, যে মানুষগুলো ফেলে যায় একা রেখে। তারা আর কখনো ফিরে না আসলে ও স্মৃতি গুলো কেনো প্রতিধ্বনির ন্যায় বার বার ফিরে আসে। কেনো তাকে হত্যার প্রচেষ্টায় আমরা বার বার ব্যর্থ হই।
আমি দেখেছি কেউ কেউ স্মৃতি হত্যায় নিজেকে হত্যা করে দিয়েছে। কেউ কেউ স্মৃতি হত্যা করতে গিয়ে পুরো দুনিয়া কেই হত্যা করে উন্মত্ত পাগল বেশে পড়ে থাকে ফুটপাথে। কেউ কেউ স্মৃতি হত্যা করেছে অন্যের বুকে মাথা রেখে। আর কিছু মানুষ আছে যারা স্মৃতি গুলো বুকে পুষে রেখে কালিমালিপ্ত হয়ে বাকি জীবনটাই অভ্যাসে পরিনত করে তুলেছে। স্মৃতি হত্যার মতো দুর্লভ বস্তূ পৃথিবীতে হয়তো আর কিছুই নেই।
জীবনে চলার পথে দেখবে অনেক কিছু পাবে, অনেক কিছু হারিয়ে ও ফেলবে, আবার এমন ও কিছু আছে যে গুলো শুধু স্বপ্নেই দেখবে। যা হয়তো না পাওয়ার বেদনায় থেকে গেছে । এর জন্য মন খারাপ হলে ও ততদিনে এটা বুঝে যাবে কিছু কিছু মন খারাপ গুলো বোকামী। অহেতুক প্রয়োজন হীন এক স্বান্তনা মাত্র। কারণ এক জীবনে সব স্বপ্ন পূরণ হয় না । এক জীবনে সবার ভালোবাসা পাওয়া যায় না সবার আপন হওয়া যায় না । তবু ও আমরা চাই সবার আপন হতে। সবার ভালোবাসা পেতে আর এর চক্করে পড়ে জীবন থেকে হারিয়ে ফেলি অনেক জনকে। কেউ স্বার্থের জন্য চলে যায়, কেউ সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যায়। আবার কেউ হয়তো মিশে যায় জীবনের ব্যাস্ততায়, নতুন পথের দিশায় হাত ধরে নেয় আগমনীকে । শুধু তোমার আমার মতো কিছু আগেবপ্রবণ মানুষ আছে যারা আজ ও পড়ে থাকে পুরাতন আলোহীন সেই গলিটায়, স্মৃতি হত্যার এক বিরাট পরিক্রমায়। ততদিনে আসা যাওয়া চলতে থাকে ব্যাক্তিত্ব হীন আত্মবাদী মানুষ গুলোর। তবু ব্যার্থ হতে হয় স্মৃতি হত্যায়। কেননা জীবনটাই একটা option মাত্র । সবকিছু compromise করে নেওয়া শিখে গেলে তোমার মত হ্যাপি আর কেউ হবে না।
চলার পথে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে যায়, সেই স্মৃতি কে বুকে পুষে রেখে অভ্যাসের দাস হয়ে যেতে হয়। আর এই অভ্যাসেই একদিন এটা বুঝে নিতে হয়, আপন সবাই হতে পারে না । আপন হওয়ার খেলাটা সবাই খেলতে পারে । atlast সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে মাঠ ছেড়ে তারা যাবেই। এটা অলৌকিক কিছু না এটাই বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতায় মনটা ও বিষাক্ত হয়ে যায়। কারোর সত্যিকারের ভালোবাসা ও তখন বিষাক্ত মনে হয়।
সমাপ্ত
আমাদের আর ও কবিতা রইলো তোমাদের জন্য :-👇👇
আমাদের আর ও গল্প পড়ুন :-👇👇
(২) মনের ঘরে সেই তুমি
(৩) ধূপকাঠি
(৪) কেয়ারলেস
(৫) কলঙ্ক
(৬) নতুন অতিথি
(৭) ফিজিক্যাল রিলেশনশিপ
(৮) দেবীরা বার বার ফিরে আসে না
(৯) অনুভূতি
(১০) ছলনা
0 Comments: