কম্পোর্ট জোন
সিরাজাম মুনিরা
প্রত্যেক মানুষের একটা কমফোর্ট জোন থাকে । এই কমফোর্ট জোনের মধ্যে থাকা যাবতীয় কাজ তথা চলাফেরাতে সে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। কিন্তু এই কমফোর্ট জোনের বাইরে যখন আপনি তাকে কিছু করতে বলবেন বিপত্তি ঘটবে তখনই । সেটা শিশু থেকে শুরু প্রাপ্ত বয়স্ক তথা বয়স্ক মানুষের বেলায় ও সমান ভাবে প্রভাব ফেলবে ।একটু খেয়াল করে দেখবেন, আপনি রোজ যে বিছানায় রাতে ঘুমোতে যান সেটা ছাড়া অন্য কোথাও যদি আপনাকে ঘুমোতে হয়, তাহলে ঘুমের বিঘ্ন ঘটবে।
আপনার নিজের রুম এবং বিছানা ছাড়া নতুন জায়গায় আপনি খানিকটা আনকমফোর্টেবল ফিল করবেন এবং এই ব্যাপারটায় আপনি ততদিন ভুগবেন যতদিন না নতুন জায়গা টাকে অভ্যস্ততায় নিয়ে আসতে পারবেন। তেমনি করে একটা ছোট মানুষ ছোটবেলা থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিবেশে বড়ো হয়ে ওঠে । তার আচার আচরন তথা জীবনপ্রবাহ আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক। আপনার সাথে সেই মানুষটার পরিচয়ের শুরুতে ও কিন্তু সেই একই রকম ছিলো। আপনি তাকে সম্পূর্ণ রকম জেনে শুনে তারপর হয়তো একটা সময় গিয়ে আপনাদের মধ্যকার সম্পর্কটা মন দেওয়া নেওয়ার পালা থেকে শুরু করে ভালোবাসা অব্দি গড়িয়েছে।
এই পর্যন্ত সবকিছু ঠিক থাকলেও, সমস্যা হয় তখনই যখন আপনি ভালোবাসার অধিকার দেখাতে গিয়ে বিপরীত পাশের মানুষটাকে একদম নিজের মতো করে বানিয়ে ফেলতে চাইবেন।
দেখুন প্রতিটি মানুষের কিছু নিজস্বতা থাকে, একটা মানুষ চাইলেই তার ভুল গুলো শুধরাতে পারে কিন্তু তার বিশ পঁচিশ বছরের অভ্যস্ততা তথা ব্যক্তিগত জীবনবোধ থেকে বেরিয়ে এসে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে নিজেকে প্রেজেন্ট করতে পারেনা। এটা প্রত্যেকটি মানুষের জন্যই খুব ডিপিকাল্ট। তাছাড়া প্রতিটি মানুষের মধ্যেই ব্যক্তি স্বাধীনতা বলতে একটা বিষয় থাকে। তাই আপনি যখন একটা মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবেন, তাকে নিজ ইচ্ছাধীন পথে চালনা করতে চাইবেন তখনই তার সাথে আপনার অসামঞ্জস্যতা প্রখর আকার ধারণ করবে। এতে করে আপনাদের মধ্যে মতের অমিল,ঝগড়া ঝামেলার উৎপত্তি হবে। একটা সময় পর সম্পর্কে ভাঙনের ডাক আসবে।
অথচ একটা সম্পর্ক সুন্দর রাখার জন্য পারস্পরিক সম্মানবোধ তথা ভালোবাসা আর বিশ্বাস-ভরসাটাই আসল। আর যে বা যারা এই গুলো কে পুঁজি করে বিপরীত পাশের মানুষটাকে নিজের গতিপথে চালনা করতে চায় তারা মানসিক বিকারগ্রস্ত বৈ আর কিছুই নয়। কারণ মানুষ কোনো পোষা প্রাণী নয় যে তাকে আপনি ওঠা-বসা,চলা-ফেরা থেকে শুরু করে কাজ করা তথা খাওয়া-পরা ইত্যাদি সবকিছু আপনার ইচ্ছাধীন করিয়ে নিবেন। বরং এগুলো করতে গিয়ে আপনি অজান্তেই আপনাদের মধ্যে দূরত্ব,অসম্মান ও বিচ্ছেদের বীজ বপন করছেন। যা সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
তাই কারোর সাথে সম্পর্কে জড়ানোর আগে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন তার লাইফস্টাইলের সাথে আপনার লাইফস্টাইল মিলে কি না। আর না মিললে আপনারা একে অপরের সাথে মানিয়ে চলতে পারবেন কি না। যদি নাই পারেন তাহলে বিপরীত মন মানসিকতা সম্পন্ন কারোর সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে ভালোবাসা শব্দটিকে বিষাক্ত করে তুলবেন না।
সমাপ্ত
আমাদের আর ও কবিতা রইলো তোমাদের জন্য :-👇👇
আমাদের আর ও গল্প পড়ুন :-👇👇
(২) মনের ঘরে সেই তুমি
(৩) ধূপকাঠি
(৪) কেয়ারলেস
(৫) কলঙ্ক
(৬) নতুন অতিথি
(৭) ফিজিক্যাল রিলেশনশিপ
(৮) দেবীরা বার বার ফিরে আসে না
(৯) অনুভূতি
(১০) ছলনা
0 Comments: