Robert Bruce Story | রবার্ট ব্রুস এর জীবন কাহিনী | Robert Brush Success Story

Bangla success story :- This success story written by Jayanti Chakrabarti.This story revolves around Robert Bruce.We are collected this type success story that revive your lost mind.You get more success story on bengali in our website. And I think  all success story will take place in your mind.So please share this story to your friends and I sure they will also benefit from this success story.Thank you so much.

 রবার্ট ব্রুস  

      স্কটল্যান্ডের সীমান্তে গভীর এক বনের মধ্যে তখন সবেমাত্র দুপুর গড়িয়ে বিকেল নেমেছে । চারিদিকে ঘুটঘুট্টি অন্ধকার । কাছে পিঠে কোথাও হাহা করে ডেকে উঠলাে এক হিংস্র হায়না । শুকনাে ডালপালা মাড়িয়ে ছুটে এল কোনাে জানােয়ার । এক নাগাড়ে ডেকে চলেছে ঝি ঝি পােকা । তাছাড়া আর কোথাও কোনাে শব্দ নেই । দশ বারাে মাইলের মধ্যে নেই কোনাে মানুষের চিহ্ন । চারিদিকে শুধু ভীষণ অরণ্য আর নিকষ কালাে অন্ধকার । প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর আশঙ্কায় যেন কেঁপে কেঁপে উঠছে বনভূমি । 

       এই নির্জন ভয়ঙ্কর বনের মধ্যে এক পাহাড়ের ছােট্ট গুহায় , ঘুটঘুটে অন্ধকারে একলাটি চুপ করে শুয়ে আছেন এক মাঝবয়সী মানুষ । শরীরে যােদ্ধার পােশাক ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে । বর্মে হয়েছে হাজারটা ছিদ্র । হাতে - পায়ে - মুখে নানা জায়গায় অজস্র আঘাতের চিহ্ন । তাদের কোনাে কোনােটা থেকে রক্ত ঝরে শুকিয়ে আছে । কোনােটা থেকে তখনও নেমে আসছে টুইয়ে পড়া ক্ষীণ রক্তধারা । ক্রমাগত রক্তপাতে মানুষটি অবসন্ন হয়ে পড়েছেন । ক্লান্ত মাথাটি বাম বাহুর ওপর রেখে চোখ বন্ধ করে পড়ে আছেন সঁাতসেঁতে মেঝের ওপর । অসম্ভব তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে । কিন্তু একদম জনমানব শূন্যস্থানে জলের আশা দূরাশা ছাড়া আর কিছুই নয় । তাই জলের সন্ধান না করে মানুষটি শুয়ে শুয়ে শান্তভাবে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করতে লাগলেন । 

     একে একে তার মনে পড়ে যেতে লাগলাে জীবনের ফেলে আসা ১৭ টি বছরের কথা । ইংল্যান্ডের রাজা এডােয়ার্ড II ষড়যন্ত্র করে রাজ্যচ্যুত করল তাকে । তারপর দিনের পর দিন , বছরের পর বছর বনে জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে সৈন্য সংগ্রহ করেছেন তিনি । তারপর অনেক আশা আর উদ্যম নিয়ে ছুটে গেছেন রাজ্যোদ্ধারে কিন্তু প্রতিবারই সকরুণ ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন । গ্রামবাসী , কৃষক প্রজারা দয়া করে তাকে খাবার পাঠিয়ে দিয়েছে । তাই খেয়ে প্রাণ বাঁচিয়ে রেখেছেন কোনােমতে । স্ত্রী পুত্র পরিবার যে কোথায় আছে , বহুদিন তাদের কোনাে খবর পাননি । সবচেয়ে ছােটো মেয়েটির কথা ভেবে তার চোখে জল এসে যায় । তার জন্মের পর থেকেই তিনি তাদের আত্মীয়দের বাড়ি রেখে এসেছেন , না জানি কতােই না অনাদরে আর অবহেলায় তাদের দিন কাটছে , হয়তাে বা বেঁচেই নেই । হয়তাে বা অপমানের হাত থেকে বাঁচতে তারা পালিয়ে গেছে ভিন রাজ্যে । ঈশ্বর জানেন জীবনে আর কখনও দেখা হবে কিনা ! 

      অতীতের কথা ভাবতে ভাবতে অসহ্য ক্ষুধা আর ক্লান্তিতে কখন যেন দুচোখ জুড়ে ঘুম এসে গিয়েছিল তাঁর । হঠাৎ একদিন বন্য পিপড়ের তীব্র দংশনে ঘুম ভেঙ্গে গেল ততক্ষণে হাজার হাজার পিপড়ে ঘেঁকে ধরেছে তাকে । নির্বিচারে দংশন করে চলেছে তাকে , কিন্তু শরীরে এতটুকু শক্তি নেই যে পিপড়েগুলােকে তাড়ান । তীব্র যন্ত্রণায় চোখে জল এসে গেল । এতদিন পর তার মনে হল , এভাবে বেঁচে থাকার কোনাে মানে হয় না । এভাবে বনে জঙ্গলে পালিয়ে পালিয়ে বেড়িয়ে অমানুষিক কষ্ট সহ্য করে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ঢের ভালাে । এতদিনে যখন পারলেন না তখন স্কটল্যান্ডের সিংহাসন পুনরুদ্ধার করা তার দ্বারা আর বােধহয় ইহজীবনে সম্ভব হবে না । অথচ শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণ করে , দেশবাসীর তীব্র বিদ্রুপ , লাঞ্ছনা আর অপমান নীরবে হজম করে ভীরু কাপুরুষের মতাে বেঁচে থাকতেও তিনি রাজী নন । অতএব আত্মহত্যা করাই বােধহয় সব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র পথ । 

       গভীরভাবে চিন্তা করছেন রবার্ট ব্রুস আর অন্যমনস্কভাবে তাকিয়ে আছেন গুহার দেওয়ালের দিকে । ভাঙ্গা ফাটল দিয়ে তখন গুহার মধ্যে এসে পড়েছে দিন শেষের মরা আলাে । সেই আবছা আলােয় রবার্ট ব্রুস দেখছিলেন একটি ছােট্ট মাকড়সা দেওয়ালের গায়ে জাল বােনার চেষ্টা করে চলেছে । গুহার পিচ্ছিল পাথরের দেওয়ালে জাল বুনতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হচ্ছিল মাকড়সাটি । বেশ কিছুটা করে জাল বােনে তারপর হঠাৎই সবটা ছিড়ে ঝুলে যায় । মাকড়সাটি একটুও না থেমে আবার শুরু করে দেয় বােনা । আবার বােনে , আবার ছেড়ে । আবার নতুন উদ্যমে শুরু হয়ে যায় বােনার কাজ , একটুও বিরতি নেই , একটুও ফাঁকি নেই তার কাজে । 

      রবার্ট ব্রুস একমনে দেখতে লাগলেন । অন্যমনস্ক হলে ক্ষুধা , তৃষ্ণা আর ক্ষতের জ্বালা অন্তত কিছুটা কমবে । তিনি ক্লান্ত দৃষ্টিকে যতদূর সম্ভব প্রসারিত করে দেখতে লাগলেন মাকড়সার কাণ্ডকারখানা । দেখতে দেখতে সারা বিকেলটা পার হয়ে গেল । এর মধ্যে অন্তত একশত বার ব্যর্থ হয়েছে মাকড়সাটি , কিন্তু হাল ছাড়েনি । তার অধ্যবসায় দেখে এত দুঃখেও হাসি পেল তাঁর । ভাবলেন আমার মতােই বেচারী মিথ্যে আশার পেছনে ছুটে বেড়াচ্ছে , ওর জন্যে একটু বুঝি দুঃখও হল তাঁর । 

      অন্যমনস্ক হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন , ঘুম যখন ভাঙ্গল তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে । অরণ্যের আকাশে উঠেছে বিরাট একফালি চাদ । গুহার দেওয়ালের সরু ফাটলখানা দিয়ে একমুঠো চাঁদের আলাে এসে পড়েছে । দেওয়ালে । সেই আবছা আলােয় রবার্ট ব্রুস দেখতে পেলেন গুহার দেওয়াল জোড়া বিশাল একখানি মাকড়সার জাল আর তার ঠিক মাঝখানটিতে চুপটি করে বসে আছে বিন্দুর মতাে ছােট্ট সেই মাকড়সাটি ।

      অনেকক্ষণ ধরে নিপুণভাবে বােনা মাকড়সার জালটির দিকে স্থির বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলেন রবার্ট ব্রুস । 

      তাই তাে ! অতটুকু একটা কীট , দেখাই যায় না প্রায় , তারও কত মনের জোর । সারাটা দিন ধরে কত শতবার ব্যর্থ হল তবু হাল ছাড়লাে । শেষপর্যন্ত জালটা বুনেই তবে ছাড়ল । এখন কেমন সুখী সে , কত তৃপ্ত ।

       নাঃ , মরতেই যদি হয় , তবে যুদ্ধক্ষেত্রেই মরব । এভাবে কাপুরুষের মতাে অন্ধকার গুহার কোণে লুকিয়ে মরব না । শরীরের অবশিষ্ট শক্তিটুকু দিয়ে কোনােমতে উঠে দাঁড়ালেন মহাবীর রবার্ট ব্রুস । জিততেই হবে , একটা ক্ষুদ্র মাকড়সার কাছে হেরে যাবেন না । ও যখন পারে তিনিও পারবেন , ব্যর্থতা আর হতাশাকে তুচ্ছ করে চেষ্টা চালিয়ে যেতে— যতদিন না নিজ রাজ্য ফিরে পান ততদিন । প্রয়ােজন হলে আমৃত্যু লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি । পরদিনই ভাের হতেই গুহা থেকে বেরিয়ে এলেন রবার্ট ব্রুস , মনে তার নতুন উদ্যম , শরীরে নতুন বল । ধীর কিন্তু দৃঢ়পায়ে এগিয়ে চললেন অরণ্যের পারে জনবসতির দিকে বাঁচতে হবে , সৈন্য সংগ্রহ করতে হবে , লড়াই করতে হবে । 

      সে বারের যুদ্ধেই জয়লাভ করেছিলেন মহাবীর রবার্ট ব্রুস । সেই ছােট্ট মাকড়সাটির দেওয়া পরম শিক্ষাটি কিন্তু তিনি সারাজীবনে একদিনের জন্যও ভােলেন নি । 

       You learn a much from those who have failed as from those who have succeeded . -Michael Johonson

   
                            সমাপ্ত 

আমাদের আর ও কবিতা রইলো তোমাদের জন্য :-👇👇

(১২) A Black Girl 

0 Comments: