থার্ড ফ্লোর। রুম নঃ ৩২। কলিংবেল বাজাতেই এক ভদ্র মহিলা এসে দরজা খুললো। আমাকে দেখেই সনম্র কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলো, "কাকে চাই?"
-"নন্দিতা, নন্দিতা শর্মা।"
ভদ্রমহিলাটি কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে। হয়তো একটু অবাকই হলেন। তারপর বললেন, "ইউ আদিত্য রাইট?" জবাব দিলাম, "হুম, নন্দিতা?"
-"না ও আর এখানে থাকে না। অনেক আগেই চলে গেছে। যাওয়ার সময় আপনার কথা অনেক বলেছিলো। এতো বছর পর আসলেন আমি তো ভাবলাম আপনি আর আসবেন ই না। যাই হোক নন্দী যাওয়ার সময় আপনাকে এই ডাইরিটা দিয়ে দিতে বলছিলো।"
ডাইরিটা হাতে নিয়েই আমি বললাম," কোথায় গেছে কোনো ঠিকানা।"
-"ডাইরিটা পড়লেই সব পেয়ে যাবেন", বলেই দরজা টা বন্ধ করে দিলো।
নন্দিতা আমার থেকে এক ক্লাস নিচে পড়তো। আমি টুয়েলভে আর ও ইলেভেনে। স্কুলের এক ফাংশানে দুজনের প্রথম পরিচয় হয়েছিলো। তারপর খুব ক্লোজ হয়ে যাই আমরা। এতো টাই দুজন মিশে গেছিলাম সবাই ভাবতো আমরা রিলেশনে আছি। সম্পর্কের বাইরে ও এমন কিছু সম্পর্ক থাকে। যার জন্য আলাদা করে কাউকে ভালোবাসার প্রয়োজন পড়ে না। Thats call of perfect life partner. জীবনের বেস্ট একটা person। প্রত্যেক মেয়েদের জীবনে একটা ছেলে বেস্ট ফ্রেন্ড আর প্রত্যেক ছেলেদের জীবনে একটা মেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড থাকেই। যার সাথে সব দুঃখ কষ্ট গুলো শেয়ার করা যায়। ভালোবাসা অনেক ক্যাটাগরিতে ভাগ থাকে। বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু, বান্ধব, প্রেমিক, প্রেমিকা। একেক জনের প্রতি ভালোবাসা টা একেক রকম। তাই আমাদেরকে নিয়ে কে কি ভাবলো বা ভাবছে এ নিয়ে আমরা একটু ও ভাবতাম না। ৩ বছর এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিলো। তারপর একটা সময় আসে যখন সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরে যায়। ভাঙ্গন জিনিসটা বেশ কমন তাই না ? সব কিছুরই মধ্যে থাকে। যে রাস্তা নদীর জলকে ঘিরে রেখেছিলো তার ও একদিন ভাঙ্গন ধরে। যে সম্পর্কটা একদিন একে ওপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলো তার ও একদিন ভাঙ্গন ধরে যায়। এটা অসম্ভব কিছু নয়। আমরা যারা খুব সহজেই মানুষকে আপন করার চেষ্টা করি, আমরা যারা অন্ধ ভাবে কাউকে ভালোবেসে ফেলি। তারা জানি এই ভাঙ্গনের গভীরতা কত টা। ও এক সময় কাউকে ভালোবেসে ফেলে। তার সাথে রিলেশনে চলে যায়। আমি হয়ে যাই অবহেলার পাত্র। ফোন করলে busy পেতাম। ম্যাসেজ গুলো unseen হয়ে পড়ে থাকতো। ঘৃণা জমে গেলো ওর প্রতি। স্বার্থের দুনিয়ায় প্রয়োজন ফুরালে সবাই হারিয়ে যায় , কথা বলার ধরণ টা ও পাল্টে যায়। আমি সরে আসতে চাইলাম ওর থেকে। সরে ও গেছিলাম, তারপর ৫ বছর আর কোনো যোগাযোগ রাখিনি। এই ৫ বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে আমি ও ততদিনে ভুলে গেছিলাম সব কিছু। ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিলাম নিজের জীবনে। চাকরীর জন্য শিফ্ট হয়ে গেছিলাম দিল্লিতে। তারপর আর ফেরা হয়নি। যেখানে একবার মন ভেঙে যায় সেখানে আর ফিরে যাওয়া টা ঠিক হয়ে ওঠে না। তবুও সম্পর্কের এক মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলাম। থাকতে পারিনি আর। একদিন রওয়ানা দিলাম কলকাতায়। অনেক যোগাযোগের পর বন্ধুদের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে চলে এলাম আজ।
মন্ডল ভবন, থার্ড ফ্লোর। রুম নঃ ৩২। চৌরঙ্গী রোড। ডাইরীর লেখা গুলো ছিলো ঠিক এমনই।
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এমন কিছু স্মৃতি আছে। যেগুলো কোনোদিন ও ভোলা যায় না। কিছু মানুষ আছে যাদের স্মৃতি গুলো দাগিয়ে দেয় হৃদয়ের পাতায়। তুই কেমন আছিস, কোথায় আছিস, জানি না। হয়তো ভালোই আছিস। আমার প্রতি তোর যে ঘৃণা টা ছিলো সেটাই হয়তো সবকিছু ভুলিয়ে দিয়েছে তোকে। আমি তো স্বার্থপর। বিশ্বাস কর মন টা যখন প্রথম কারোর প্রেমে পড়ে না। একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। প্রথম কয়েকদিন তোকে একটু সময় কম দিতাম। তুই এতেই আমায় স্বার্থপর বলে চলে গেলি। তাও খারাপ লাগে নি। নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছিলাম। বার বার তোর ধারে ফিরে যেতে চেয়েছিলাম but তুই তো পাত্তায় দিতে চাইতিস না। Avoid করে চলে যেতিস। সম্পর্ক ভাঙার হলে অনেক কারণ দেখানো যায়। রাখতে চাইলে কারণ খোঁজার ও অপশনাল থাকে। যেদিন তোর বার্থডে ছিলো । তোকে সারপ্রাইস দেওয়ার জন্য বন্ধুরা বলেছিলো আমাকে যেতে। আমাকে দেখেই তোর সেদিন মুড অফ হয়ে গেছিলো। কোনো কথা বলিসনি। বুঝেছিলাম আমিই তোর মন খারাপের কারন। জানিস চোখের জলটা ঝরার জন্য আলাদা কিছুর প্রয়োজন পড়ে না। প্রিয়জনের আঘাতেই জলটা এমনিই ঝরে যায় । সবাই বলে মেয়েরা নাকি কেঁদে জিততে চায়। ধরে নে তোর চোখে আমি ও তেমন। এই টুকু আর বাকি থাকবেই বা কেনো। চলে এসেছিলাম সেদিন। সরে গেছিলাম তোর জীবন থেকে।
আজ ও খুব মনে উঠছে হাসপাতালের এক বেডে পড়ে আছি। হয়তো বেশী দিন আর বাঁচবো না। সবার মুখে কেমন অন্ধকারের ছাপ দেখি। কেউ কিছু বলতেই চায় না। But আমি বুঝি চোখ বুজলেই দেখি মৃত্যুর হাতছানি। ঘোর অন্ধকার। ভয় লেগে যায়। খুব মন চায় তুই ফিরে এসে যদি হাতটা ধরতিস । হয়তো অনেকটা সাহস পেতাম। লড়তে পারতাম জীবনের সাথে। ব্রেস্ট ক্যান্সার লাস্ট স্টেজ। জানি বাঁচার আশা নেই। কারোর মনে খারাপ হয়ে থাকতে কেমন লাগে জানিস। তুই তো সেদিন আমায় একটু ও বুঝিসনি বোঝার চেষ্টা ও করিসনি। ঘৃনা করেই চলে গেলি। আমার আজ ও খারাপ লাগে না। তবে একটা কথা বলতে চাই, "ঘৃণা যদি করতেই হয় এমন ভাবে করিস। যেনো আমার মৃত্যুতে তোর চোখে জল নয়, হাসি আসে, ফিরে আছিস কোনো একদিন ডাইরীর পাতার ভাঁজে অপেক্ষায় রইলাম তোর জন্য।"
সমাপ্ত
আমাদের আর ও কবিতা রইলো তোমাদের জন্য :-👇👇
আমাদের আর ও গল্প পড়ুন :-👇👇
Tag:-
- Tui firbi bole
- Pallab Mondal
- Love Junction
- Sad love story
- story in bengali
- friendship sad story
- friendship story
- story
- golpo
- bengali story
- bangla golpo
- pallab mondal bengali poem
Sad Love Story :- This story is written by "Pallab Mondal". Poem name, "Tui Firbi Bole". We are collected best love poem, romantic poem, sad poem and sad story, love story, friendship story, romantic story in Bengali. We can also published your poem or story in Bengali. If you want to send your Bengali poem . Like sad poem, romantic poem, love poem and many others poem in Bengali. Then you can contact me. My email id , "lovejunction506@gmail.com". So please sent your poem or story and don't forget to mention your name. I published your creation on my website. Please share this poem in your friends or lover to gift a beautiful moment. Thank you so much.